পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপসংহার দেশ ও সমাজহিতৈষী কৰ্ম্মবীর প্যারীচাদের জীবনকাহিনী সংক্ষেপে বিবৃত হইল। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে র্তাহার স্মরণীয় কীৰ্ত্তি ছাড়াও সে কালের বহু জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্ত, পরিচালক ও কাঁ হিসাবে তাহার কীৰ্ত্তি সামান্য নহে ; তিনি আমৃত্যু এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্য দিয়া দেশের সেবা করিয়া গিয়াছেন। এ সকল সূত্বেও আজ ম্বে তিনি আমাদের স্মৃতিপথের অন্তরালে চলিয়া যাইতেছেন, সে কেবল আমরা আয়ুবিস্মৃত জাতি বলিয়া। তাহার দীর্ঘ জীবনের সহিত কোন অপকীৰ্ত্তি অথবা নিন্দনীয় কৰ্ম্ম জড়িত নাই ; বরং তাহার সাধুতা ও সচ্চরিত্রতার বহু নিদর্শন আছে । তাহার অমায়িক নিৰ্ব্বিরোধী চরিত্রের জন্য তিনি দেশী বিদেশী সকলের প্রশংসাভাজন হইয়াছেন। বাংলা ভাষাকে দীর্ঘসমাসবদ্ধ অভিধানগন্ধী শব্দসংযোজনা হইতে মুক্তি দিয়া সাধারণের দৈনন্দিন ব্যবহারের সামগ্ৰী করিয়া তুলিবার যে আন্দোলন উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে আরম্ভ হইয়াছিল, প্যারীচা তাহার অন্ততম নেতা ছিলেন। শুধু 'আলালের ঘরের দুলালের জন্যই যে র্তাহার ভাষা-আন্দোলন স্মরণীয় হইয়া আছে এমন নয়, মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায় প্রভৃতি পুস্তকে আলালী ভাষা ক্রমপরিণতি লাভ করিয়া তাহার মনের গ্রগতিশীলতার প্রমাণ দিতেছে। তাহার স্বভাব ও চরিত্রের অনুযায়ী ছিল তাহার ভাষা। আলালী অথবা বিদ্যাসাগরী, যে-ভাষাই তিনি ব্যবহার করিয়া থাকুন, বিশুদ্ধি ও প্রাঞ্জলতার গুণে তাহা সৰ্ব্বদাই মুখপাঠ্য হইত। তিনি কোনও দিকেই কোনও বিশৃঙ্খলা বা অস্পষ্টত বরদাস্ত করিতেন না। প্রাগ বঙ্কিম-যুগে ভাষা-ব্যাপারে ইহা যে কত বড় গুণ, অমুশীলনকারী মাত্রেই তাহ বুঝিতে পরিবেন।