পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

{& বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্বাদকৌতুক স্বয়ং লিখিয়া প্রকাশ করিতে থাকেন; মানবীয় সভ্যতার ক্রমবিকাশে বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তায় বিশ্বাসী ছিলেন বলিয়া বিজ্ঞানবিষয়ক রচনাকেও বাদ দিতে পারেন নাই। স্বীয় স্বভাবধৰ্ম্মে পলিটিক্সকে বাদ দিয়া চলিলেও তিনি যে একান্তভাবে তাহা বর্জন করিতে পারেন নাই, তাহার পরিচয় "সামো’ আছে। বহরমপুরে অবস্থানকালেই (১৮৭৩) বঙ্কিমচন্দ্র বিষবৃক্ষ’ ও ‘ইন্দিরা পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন। উদ্যোগ-পর্কের রোমান্স ও ঐতিহাসিক রোমান্সে যে কাজ হয় নাই, এই সামাজিক উপন্যাস দুইটির প্রকাশে সে কাজ সহজেই সাধিত হইল। বাংলাদেশের সাধারণ বাঙালীর বর্তমান দৈনন্দিন জীবন যে উপন্যাসের বিষয় হইতে পারে, এই সত্য উপলব্ধি করিয়া সমগ্র বাঙালী জাতি সে দিন পুলকবিহ্বল হইয়াছিল। শিক্ষিত সমাজ যে বাংল-সাহিত্যকে ঘৃণায় বর্জন করিয়া চলিতেন, সেই শিক্ষিত সমাজই বাংলা-সাহিত্যের পরম সম্ভাবনার কথা চিন্তা করিয়া আশ্বস্ত ও প্রলুব্ধ হইয়া উঠিলেন, বাংলা-সাহিত্য পশ্চাতের খিড়কিদ্বার হইতে একেবারে সরেসমারোহের সাহত উন্নীত হইল। 籌 ...বাংলাকে কেহ শ্রদ্ধাসহকারে দেখিত না। সংস্কৃত পণ্ডিতেরা তাহাকে গ্রাম্য এবং ইংরাজি পণ্ডিতেরা বধবর জ্ঞান করিতেন । বাংলা ভাষায় যে কীৰ্ত্তি উপার্জন কর বাইতে পারে সে-কথা উহাদের স্বপ্নের অগোচর ছিkrঅসম্মানিত বঙ্গভাষাও তখন অত্যন্ত দীন মলিনভাবে কালযাপন করিত •. এমন সময়ে তখনকার শিক্ষিতশ্রেষ্ঠ বঙ্কিমচন্দ্র আপনার সমস্ত শিক্ষা সমস্ত জমুরাগ সমস্ত প্রতিভ উপহার লইয়া সেই সঙ্কুচিত বঙ্গ-ভাষার চরণে সমর্পণ করিলেন; তখনকার কালে কি যে অসীমান্ত কাজ করিলেন তাহ উহারই প্রসাদে আজিকার দিনে আমরা সম্পূর্ণ অনুমান করিতে পারি না।