পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সাহিত্য-প্রতিষ্ঠানের সহিত তিনি কোন-না-কোনরূপে সংশ্লিষ্ট ছিলেন । কলিকাতার ভার্নাকিউলার লিটারেচার সোসাইটি নানাবিধ উত্তম পাঠ্য পুস্তক প্রকাশ করিতেন। এই সভার উপর বিদ্যাসাগরের কর্তৃত্ব ছিল। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’র প্রবন্ধ নিৰ্ব্বাচনের জন্য, এশিয়াটিক সোসাইটির আদশে, একটি পেপার কমিটি গঠন করিয়াছিলেন ; বিদ্যাসাগর এই কমিটির ৪ একজন উৎসাহী সভ্য ছিলেন। কিন্তু সংস্কৃত কলেজের শিক্ষা-প্রণালীপ সংস্কারই শিক্ষা-বিস্তারে বিদ্যাসাগরের শেষ ও প্রধান কায্য নহে। বাংলা-শিক্ষা প্রচলন তখনকার কালে দেশবাসীর শিক্ষার দিকে ভারত-সরকারের বিশেষ লক্ষ্য ছিল না। সংস্কৃত ও আরবীর জন্য সরকার কিছু টাকা ব্যয় করিতেন মাত্র। ১৮৩৫ খ্ৰীষ্টাব্দের মার্চ মাসে গবর্নর-জেনারেল বেণ্টিঙ্ক মিনিটেলিখিলেন,—“ভারতবাসী জনসাধারণের মধ্যে পাশ্চাত্ত্য সাহিত্য ও বিজ্ঞানের প্রচারই ব্রিটিশ-রাজের মহৎ উদ্দেশা হওয়া উচিত এবং শিক্ষা-বাবদ সকল মধুরী অর্থ শুধু ইংরেজী-শিক্ষার জন্য ব্যয় করিলেই ভাল হয়।” এই গুরুতর সিদ্ধান্তের দিন হইতে গবর্মেন্ট ইংরেজী ভাষার মধ্য দিয়াই শিক্ষা-ব্যবস্থায় উৎসাহ দান করিতে লাগিলেন। বেণ্টিঙ্কের নব ব্যবস্থায় উচ্চ এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শিক্ষা সম্পর্কিত অভাবই দূর হইতে পারে। সেই হেতু শিক্ষানি । সাধারণের দাবি বিশেষভাবে উপস্থাপিত হইতে লাগিল। কিন্তু ইংরেজী কিম্বা সংস্কৃত ভাষার ভিতর দিয়া ত আর দেশের লোককে শিক্ষিত করিয়া তুলিতে পারা যায় না ;–মাতৃভাষার মধ্য দিয়াই জনসাধারণ জ্ঞানলাভ করে। এই দিক দিয়া প্রথম প্রচেষ্টার সম্মান সাৰ্ব হেনরী হার্ডিঞ্জের প্রাপ্য।