পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রঙ্গালয়ে স্বর্ণলতা ' )3 কালভূজঙ্গিনী প্রমদার,—না সেই কোমলহৃদয়া, কুটিল-সংসারজ্ঞান-বিরহিত পতিপ্রাণী সাধবী দেবী-রূপী সরলার ? আবার অন্ত দিকে হাস্যরসের সপ্ত-সমুদ্র সেই নীলকমল, না সেই অক্ষয় গ্রন্থের অক্ষয় স্বজিত আদর্শ-নারী শু্যাম দাসীর ? এক দিকে ভ্রাতৃবংসল বিধুভুষণ ও অন্ত দিকে দানবী স্ত্রীর মস্ত্রে মুগ্ধ কাপুরুষ শশীভূষণ ! ফলতঃ ভালর কোলে মন্দ ও মন্দের কোলে ভাল না থাকিলে, প্রকৃত সৌন্দর্য্যের পূর্ণ বিকাশ হয় না। ঘটনা-স্রোতের অনিবাৰ্য্য ঘাত-প্রতিঘাতে হৃদয়কে উদ্বেল করিতে না পারিলে নাটক হয় না ; আর তাহ অভিনয় করিলে অনিষ্ট বই ইষ্ট নাই । কিন্তু উপস্থিত গ্রন্থে তাহা প্রচুর পরিমাণে পরিলক্ষিত হয় । আমরা এই অভিনয় দেখিয়া অবিশ্রান্ত অশ্র বিসর্জন করিয়াছি । আবার সময়ে সময়ে হাসিতে হাসিতেও পেটের নাড়ী ছিড়িয়া গিয়াছে । সেই ‘ডিডি—ডিডি ঐ ঢল্লে’ গদাধরের উক্তি এখনও আমাদের কৰ্ণে যেন লাগিয়া রহিয়াছে । আর-—সেই সরলার মৰ্ম্মভেদী শেষ দৃশু ; সেই দৃশু অনেক দিন স্মৃতি-পটে বিরাজ করিবে । শিশু গোপালের “ম। আমার খিদে পাই নি, তুষ্ট কাদিস নে” সেই মৰ্ম্মস্পশী উক্তি বড়ই স্বাভাবিক । ফলতঃ অভিনয়ে আমরা নিন্দার বড় কিছুই দেখিতে পাই নাই ; যদি বা কিছু হইয় থাকে, তাহ সে অপার গুণরাশির মধ্যে বিলীন হইয়া ষায় । এ অভিনয়ে, সমাজের যথেষ্ট উপকার হইবে তদ্বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। এই অভিনয়ে আমরা কায়মনবাক্যে কোম্পানীর মঙ্গল প্রার্থনা করি । আরও আমরা প্রার্থনা করি, “ভাই ভাই ঠাই ঠাই” যে বঙ্গবাসীর মূলমন্ত্র সেই অধঃপতিত বঙ্গের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলে যেন এক একবার ‘সরলা’র অভিনয় দেখিয়া কঁাদিতে কঁদিতে জীবনের কঠোর কর্তব্য বুঝিয়া আসেন।”