পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারকনাথ ও বাংলা-সাহিত্য বঙ্কিমচন্দ্র ‘আলালের ঘরের জুলালে’র সমালোচনা করিতে বসিয়া ঘলিয়াছিলেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে প্যারীচাদ চরম দুৰ্গতি হইতে রক্ষা করিয়াছেন ; কারণ, তিনিই সৰ্ব্বপ্রথম বাঙালী লেখক, যিনি বৈদেশিক বা ভিন্ন-ভাষার সাহিত্যের আশ্রয় গ্রহণ না করিয়া স্বদেশ ও স্বসমাজ হইতেই রচনার উপকরণ সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন । প্যারীচঁাদ মিত্র সামাজিক চিত্র মাত্র অঙ্কিত করিয়াছিলেন, উপন্যাস রচনা করেন নাই । স্বদেশ ও স্বসমাজ হইতে উপকরণ লইয়! প্রথম সার্থক উপন্যাস রচনার কৃতিত্ব তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের ; প্রকৃতপক্ষে তাহার ‘স্বর্ণলতা’ই বাংলা দেশের প্রথম সামাজিক উপন্যাস । এই একটি মাত্র উপন্যাসের দ্বারাই তারকনাথ যশস্বী হইয়াছিলেন। ইংলণ্ডীয় কবি গ্রে যেমন তাহার বিখ্যাত ‘এলিজি’ কাব্যের সাহায্যে ইংরেজী কাব্য-সাহিত্যে চিরদিনের প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছেন, তারকনাথ ও তেমনি তাহার ‘স্বর্ণলতা’র সাহায্যে বাংলা-সাহিত্যে স্থায়ী আসন প্রাপ্ত হইয়াছেন । এইটিই তাহার প্রথম রচনা । বিস্ময়ের বিষয় এই যে, তাহার পরবর্তী আর কোনও রচনাই স্থায়ী গৌরব লাভ করিতে পারে নাই । ‘স্বর্ণলতা’ দীর্ঘকাল ধরিয়া বাঙ্গালী সমাজকে হাসাইয়াছে, কাদাইয়াছে, সমাজের অনেক গ্রানি ও কালিম দূর করিবার সহায়ু হইয়াছে । সেকালের ঈর্ষাদিগ্ধ কলহপরায়ণ কুসংস্কারমণ্ডিত সমাজের এমন বাস্তব জীবন্ত চিত্র আর কেহ তেমন ভাবে অঙ্কিত করিতে পারেন নাই। ইহার কারণ তাহার জীবনীর মধ্যেই খুজিয়া পাওয়া যায়—তিনি তাহার বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ভূয়োদর্শন হইতে এই উপন্যাস রচনা করিয়াছিলেন । যাহা দেখিয়াছিলেন, যথাযথভাবে তাহ লিপিবদ্ধ করিবার