পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবাহ ও বৈধব্য } অশক্ত, এমনতর অদ্ভুত জীব দেখিয়া অনেকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ এবং নিষ্ঠুর সমালোচনা করিতে প্রবৃত্তা হইলেন। কেবল আমি বলিয়া নহি, বঙ্গগৃহের অনেক বালিকা বধূকেই এইরূপে “মায়ুষ” হইতে হয়। যাহা হউক ক্রমে ক্রমে আমাকে বিনীতা ও আজ্ঞাতু বৰ্ত্তিনী দেখিয়া গুরুজনেরা আমার প্রতি সস্তুষ্ট হইলেন । আর আমার তখনকার সরলতা ও কবিতা রচনার ক্ষমতা দেখিয়া ননন্দ প্রভৃতি সমবয়স্কাগণ আমাকে প্রীতির সহিত গ্রহণ করিলেন । এখানে আমি একগু য়েমি ও অভিমান ত্যাগ করিয়; সকলকে প্রসন্ন করিতে এবং গৃহকৰ্ম্ম শিখিতে একান্ত চেষ্টা করিতে লাগিলাম। আমার জ্যেষ্ঠা জা শিল্পকাজে স্বনিপুণ, তাহার নিকটে 'সেলাই শিখিলাম । তখন পতি-দেব কলিকাতায় পড়িতেন । ছুটতে বাটী আসিয়৷ আমার ননন্দাদিগের নিকটে আমার কবিতা রচনার কথা শুলিলেন । তিনি আমাকে প্রত্যহ এক-একটি কবিতা রচনা করিতে বলিলেন } তিনি যে আমার পরম সুহৃদ শ্বশুরবাড়ীতে আসিয়া তাহাই আমার বিশ্বাস হইল। ক্রমশঃ তাহাকে স্বর্থী ও সন্তুষ্ট করাই আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য হইয়া উঠিল । সুতরাং তাহার অভিপ্রায়াতুসারে আমি সহস্র গৃহকৰ্ম্মের মধ্যে দিনের বেলায় এক একটি পদ্য লিথিয় রাত্রিতে তাহাকে "উপহার” দিতাম । এই কাজ খুব গোপনে করিতে হইত। কারণ, তখনকার দিনে এরূপ কাজ বড়ই “লজ্জা”র, বড়ই "অসমসাহসে”র এবং “বিরক্তি’র বিষয় হইত। যাহা হউক স্বামী ইহাতে বড়ই আনন্দিত হইতেন এবং পরদিন প্রত্যুষে তাহার বন্ধু-বান্ধবদিগের সহিত উহা পাঠ করিতেন । বন্ধুগণ সেই কবিতার মুখ্যাতি করিতেন ; কিন্তু আমি পাছে মুখ্যাতি শুনিয়া অহঙ্কত হইয়া উঠি, এজন্য স্বামী অত্যন্ত সতর্ক হইতেন । পরবত্তী কালে তিনি আমার নিকটে—যিনি আমাদের বঙ্গ