পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ও সমাজ-সেবা 3 * আত্মগঠন করিয়া ভগবানের চরণে আত্মসমর্পণ করিয়া, হৃদয়ের মধ্যে স্বগীয় স্বামীর মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়া, জাতীয় ভগিনীগণের উন্নতিসাধন, শিশুদিগকে উপযুক্তরূপে গঠন এবং অনাথ আতুরদিগকে সেব, ইহাই বিধবা রমণীদিগের কর্তব্য। আমার এই কথা জনসাধারণকে বুঝাইবার জন্য উপন্যাসাকারে ‘বনবাসিনী’ লিখিয়াছিলাম । ইহা বামাবোধিনীসম্পাদক মহাশয় স্বতঃই বুঝিয়াছিলেন।...ঐ ক্ষুদ্র পুস্তক সাধারণের নিকটে খুব আদৃত হইয়াছিল। এই “জুবিলী সময় হইতে বামাবোধিনী-সম্পাদক মহাশয় আমাকে নিজ কন্যারূপে স্নেহ করেন। আমার শরীর, মন ও আত্মার কল্যাণসাধন, তাহার কৰ্ত্তব্যকৰ্ম্ম হইয়া উঠিয়াছিল । আমার লেখা তিনি সাগ্রহে, সমাদরে সম্পাদকীয় স্তম্ভে গ্রহণ করিতে লাগিলেন। লিখিত বিষয়ে কোন ক্রটি হইলে তাহাও স্নেহের সহিত বুঝাইয়া দিতেন। আমাকে যেরূপ সদুপদেশ দিয়া পত্র লিখিতেন, আমার জীবনে তাহা যেরূপ প্রার্থনীয় সেইরূপ দুপ্রাপ্য। তিনি ধাৰ্ম্মিকা গ্রগণ্য এবং দেবতুল্য চরিত্রবান জানিয়া তাহার কাছে পত্রাদি লিখিতে আমার কিছুমাত্র লজ্জা সঙ্কোচ হইত না । আমি মনে মনে র্তাহাকে আমার পিতৃদেবের মত ভক্তি করিতাম । এই সময় হইতে বামাবোধিনীতে অামি পদ্য অপেক্ষা গদ্য প্রবন্ধ অধিকাংশ লিখিতে লাগিলাম। আমাদের অন্তঃপুর-শিক্ষার জন্য শিক্ষয়িত্রী, পল্লীগ্রামের স্ত্রীচিকিৎসক এবং ধাত্রীর আবশ্যকতা বিষয়ে আমি সাধারণের মনোযোগ আকর্ষণ জন্য একাধিক বার প্রবন্ধ লিখিয়াছিলাম। বাল্য-বিবাহ নিবারণ এবং বরপক্ষের অর্থলুব্ধতা নিবারণ জন্যও ক্ষুদ্ৰাদপি ক্ষুদ্র শক্তি লইয়া যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছিলাম। অতঃপর আমি নব্যভারত পত্রে কবিতা লিখিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলাম। সেই সঙ্গে অন্যান্য মাসিকপত্রে দুই-চারিটি কবিতাও প্রকাশ করিয়াছিলাম । ૨