পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>* বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছন্দ, ভাব, ভাষা বা ভঙ্গীর প্রতিবিম্ব দেখিতে পাইবে, বলেন্দ্রনাথ র্তাহার ঘরের-র্তাহার সেই শিক্ষা-গুরুর প্রভাব হইতে আপনার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করিতে পারিয়াছেন । আমি এমন বলিতেছি না ষে, বলেন্দ্রনাথের গদ্যে বা পদ্যে রবীন্দ্রনাথের কোন প্রভাবই লক্ষিত হয় না। পরবর্তী লেখককে লব্ধপ্রতিষ্ঠ পূৰ্ব্বতন সম্পন্ন লেখকের নিকট কিছু না কিছু পরিমাণে ঋণগ্রস্ত হইতেই হইবে । তবে যাহার মূলধন আছে, প্রকৃতির হাত হইতে যিনি কোনরূপ বিশেষত্ব পাইয়াছেন, বিলম্বে অবিলম্বে র্তাহার প্রতিভা-গৌরব স্বাধীন আকারে নিশ্চয়ই প্রকাশ পাইবে বলেন্দ্রনাথের সেই বিশেষত্ব ছিল । ফল কথা, তিনি জন্ম কবি-আজন্ম রচনা-রুসিক ( stylist ) । গদ্যে এবং পদ্যে উভয়েই তাহার নিজত্ব ছিল— এবং উভয়েই তিনি প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছিলেন । কিন্তু গদ্যে তিনি যেরূপ উৎকর্ষ সাধন করিয়াছিলেন, পদ্যে আজও তাহ পারেন নাই । ইহার অর্থ নয় যে, তাহার ছন্দোময়ী রচনা অপরিণত বা অসম্পূর্ণ। আমার বক্তব্য এই যে, গদ্যের সকল পর্দাই তাহার ক্ষমতার অধীন ছিল—গদ্যের এমন কোন রহস্য বা ভঙ্গী নাই, যাহ। তাহার লেখনীর আয়ত্ত ছিল না। কিন্তু তাহার পদ্য সম্বন্ধে আমরা ঠিক এ কথা বলিতে পারি না । তাহার পদ্য-সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হইলেও আমাদের মনে হয় কবির অন্তলীন ক্ষমতা এখনও সমস্ত বিকাশ পায় নাই এবং কালে এই সৌন্দৰ্ঘ্য পরিসরে আরও বিস্তৃত হইবে—ইহার গভীরতা আরও বাড়িবে এবং ইহার ঝঙ্কার ও উন্মাদনা আরও বৈচিত্র্য লাভ করিবে । গদ্য এবং পদ্যের মৌলিক বিভিন্নতা কিন্তু এইরূপ ভাবিবার অপর কারণ । গদ্যের শক্তি ও উৎকর্ষের সীমা আছে—পদ্যের নাই । গদ্যে মানব-হৃদয়ের সমস্ত উচ্চতার “নাগাল’ পায় না—গভীরতার থৈ’ পায়ু না-সৌন্দর্য্যের সমস্ত উচ্ছাস, ললিত-তরঙ্গ ধরিতে পারে না—জীবনের অসীম বিস্তৃতি ব্যাপিতে পারে না । কিন্তু মিল ও ছন্দে—ঝঙ্কার,