পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/৩৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুরেশচন্দ্র ও বাংলা-সাহিত্য ९ ¢ জীবিতকালে তাহকে বিষয়ী সংসারী বলিয়া বোধ হইত। তাহার দেহাত্যয়ের পর দেখা গেল, ভূদেবের শাস্ত্রচর্চা নিষ্ফল নছে ; গীতার উপদেশে তিনি নিজ জীবনযাত্রা, সংসারপ্রণালী নিয়মিত করিয়াছিলেন । নিষ্কাম ধর্থের শিক্ষক ও শিষ, নিষ্কাম ভাবে চিরজীবনসঞ্চিত প্রচুর অর্থ দান করিয়া বঙ্গে উজ্জল আদর্শ রাখিয়া গিয়াছেন । ভূদেব-চরিত্রের মূল স্বত্র, তাহার মৌলিকতা । তিনি ইয়ুরোপীয় সাহিত্য ও সভ্যতার পূর্ণ দীক্ষা গ্রহণ করিয়াছিলেন, কিন্তু কখনও আত্মবিসর্জন করিয়া, পাশ্চাত্য পথের পথিক ছন নাই। স্বদেশের ধৰ্ম্মে, শাস্ত্রে, সমাজে, সংস্কারে, সাহিত্যে, তাছার প্রভূত আস্থা, অত্যন্ত অম্বুরাগ ছিল । কিন্তু অন্ধ বিশ্বাস কখনও তাছাকে আয়ত্ত করিতে পারে নাই। এক দিকে বিলাতী শিক্ষার নয়নান্ধকারী উজ্জল চাকচিক্য, অদ্য দিকে স্বদেশীয় ধৰ্ম্মশাস্ত্রের নির্বাণোন্মুখ বিকৃত বহিরালোক, ভূদেব উভয়ের একটিকেও নিজের লক্ষ্য করেন নাই। বিচারকুশল প্রাচীনকালের প্রবীণ আর্ঘ্যের ন্যায়, নিজের যুক্তি ও বিচারশক্তির সাহায্যে, উভয়ের অস্তর্নিহিত সাৰ্ব্বভৌম উদার আলোকে উভয়কে বুঝিয়াছিলেন, —চিস্তা ও গবেষণার দ্বারা নিজের গন্তব্য পথের নির্ণয়ে অগ্রসর হইয়াছিলেন । গডডলিকাপ্রবাহের মৃণয় এক দিকে প্রধাবিত বাঙ্গালী সমাজে এ দৃশ্ব আদৌ উপেক্ষণীয় নহে । ভূদেব না ভাবিয়া কিছু করিতেন না,—নিজের চিস্তা ও বিচারশক্তির সাহায্যে যাহা কৰ্ত্তব্য বলিয়া বুঝিতেন, প্রাণপণে তাহা পালন করিতেন । তাহার পারিবারিক প্রবন্ধ, সামাজিক প্রবন্ধ, আচার প্রবন্ধ, পুষ্পাঞ্জলি,—কেবল সাহিত্য হিসাবে দেখিলে চলিবে না, এই সকল গ্রন্থে, তিনি নিজের হৃদয়ের চিত্র অঙ্কিত করিয়া গিয়াছেন । এ দেশে আন্তরিকতা বড় অল্প। কিন্তু ভূদেবে এই আস্তরিকতা বড়