পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (চতুর্দ্দশ ভাগ).pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*ान्म ४७>8 ] বঙ্গীয় পুরাবৃত্তের উপকরণ ܣܬ যান। মহারাজ লক্ষ্মণ সেন তান্ত্রিক আচারের পক্ষপাতী ছিলেন না, তিনি বরং পিতামহ বিজয়সেনের ন্যায় বৈদিক আচার-প্ৰবৰ্ত্তনের জন্য প্রচ্ছন্ন ভাবে সচেষ্ট ছিলেন। এই কারণে তিনি বহুসংখ্যক বৈদিক ব্ৰাহ্মণক তাম্রশাসন দ্বারা বহুতর গ্রাম দান করিয়া ছিলেন, এবং হলায়ুধ, পশুপতি ও কোব প্রভৃতি তঁহি'র সভাস্থ *বৈদিকছু পণ্ডিতগণ দ্বারা, বৈদিক আচার প্রবর্তনের উপযোগী গ্ৰন্থ সকল ও রচনা করাইয়াছিলেন। এদিকে পিতার আদেশ অলঙ্ঘনীয় মনে করিয়া তিনি কুলীন সমাজের সংস্কারেও মনোযোগী হইয়াছিলেন, এই উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য তিনি তঁহার প্রধান ধৰ্ম্মাধিকারী হলায়ূধকে দিয়! মৎস্যসুত্ৰু নামে একখানি মহাতন্ত্র প্রচার করেন । তান্ত্রিক প্ৰধান গৌড়-লঙ্গ-সমাজে তান্ত্রিক আচারের মধ্যে বৈদিক আচারের প্রবর্তনই মৎস্তন্মুক্ত নামক মহাতন্ত্র প্রচারের উদ্দেশ্য । মৎস্তসূক্তে তান্ত্রিক সমাজের সংস্কারের জন্য লক্ষ্মণসেন প্ৰথমে যে ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, অ্যাজ ও গৌড়-বঙ্গের হিন্দু সমাজে সেই ব্যবস্থাই প্রচলিত দেখিতেছি, মঞ্ছারাজ লক্ষ্মণসেন তান্ত্রিক ও বৈদিকসমাজের যে সমম্বয় ঘটাইবার চেষ্টা করিয়াছিলেন, উহা মৎস্যসুক্ত পাঠ করিলে বিশেষ রূপে জানা যাইতে পারা যায়। যাহা হউক বৈদিক আচার প্রবর্তনের জন্য লক্ষ্মণ সেনের মনোগত অভিপ্ৰায় থাকিলেও এবং তান্ত্রিকগণকে বৈদিক গণ্ডীর মধ্যে আনিয়া বৈদিক প্রাধান্যস্থাপনের চেষ্টা থাকিলেও তাহার উদ্দেশ্য সুসিদ্ধ হয় নাই। এমন কি দেখা যায়, ভবিষ্যতে তাহার সম্মানিত বৈদিক সমাজ ও তান্ত্রিক সমুদ্রে বিলীন হইয়া গিয়াছেন এবং তান্ত্রিক ধৰ্ম্ম আশ্ৰয় করিয়া “তান্ত্রিকী বৈদিকী চৈব দ্বিবিধ শ্রুতি কীৰ্ত্তিতা” ইত্যাদি শ্লোক আওড়াইয়া তত্বের ও বেদমূলকতা ঘোষণা করিতেছেন । মহারাজ বল্লালসেনের কুলবিধি প্ৰচলিত হইবার পর তিনিযুক্ত কুলাচাৰ্য্যগণ কর্তৃক প্ৰত্যেক, কুলীনের অংশ-বংশনির্ণয়ার্থ কুল গ্ৰন্থসমূহ সঙ্কলিত হইতে থাঁকে । বল্লালসেনের সময়ে যে সকল কুলগ্রন্থ রচিত হয়, সে সমস্ত গ্ৰন্থ এখনও আমাদের হস্তগত হয় নাই। তৎপৌত্র কেশবসেনেব সভাসদ এড় মিশ্ররচিত কুলগ্রন্থের কতকটা পাওয়া গিয়াছে। এভু মিশ্ৰ লিখিয়াছেন, মুসলমান কর্তৃক নদীয়া ও গৌড় অধিকারের পর রাজা কেশবসেন পিতামহপ্ৰতিষ্ঠিত কুলীনগণকে সঙ্গে লইয়া পিঞ্যামপুরে অপর এক সেনরাজের সভায় পলায়ন করেন । পূৰ্ব্ববঙ্গাধিপ সেই সেন রাজের সভাতেই সেই রাজ কর্তৃক অনুরুদ্ধ হইয়া এড় মিশ্ৰ বল্লালী কুলনিয়ম কীৰ্ত্তন করিয়াছিলেন । যে পুৰ্ব্ববঙ্গাধিপ সেন রাজের সভায় রাজা কেশব সেন ও এড় মিশ্র প্রভৃতি উপস্থিত হইয়াছিলেন, সেই নৃপতি তাম্রশাসনে ‘সি গৰ্গযবানান্বয়প্ৰলয়কালরুদ্রো নৃপঃ” ও “বিশ্বরূপসেনদেব৷” আখ্যায় অভিহিত হইয়াছেন। বিশ্বরূপ সেনকে নিজ রাজ্য রক্ষার জন্য দীর্ঘ কাল মুসলমানদিগের সহিত সংগ্ৰামে লিপ্ত থাকিতে হইয়াছিল, এ কারণ তিনি সমাজ-সংস্কারের দিকে মনোযোগ করিতে পারেন নাই। হরিমিশ্রের কারিকা হইতে জানা যায় যে, মহারাজ লক্ষ্মণ সেনের পৌত্র দিনৌ জামাধব লক্ষ্মণসেন সাহা করিতে পারেন নাই, তাহা সংসাধনের জন্য তিনি সকলে