পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (চতুর্দ্দশ ভাগ).pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Hāt ატა 8 ] বঙ্গীয় পুরাবৃত্তের উপকরণ 6 বিষয়েই সাধারণের বিশেষ লক্ষ্য ও মনোযোগ ছিল, তাহারই ফলে বাঙ্গালার সকল উন্নত সমাজেই বিস্তৃত সামাজিক ইতিহাসের সৃষ্টি হইয়াছে। কিন্তু নিতান্ত পরিতাপের বিষয়, পাশ্চাত্য শিক্ষার গুণে অযত্নে অনাদরে সেই টিাতীয় ইতিহাস আমরা নষ্ট করিতেছি, সেই প্রকৃত ইতিহাসের দিকে আমাদের লক্ষ্য নাই! আমাদের পূৰ্ব্বপুরুষেরা সেই প্রকৃত ইতিহাসের চর্চা করিতেন। কেবল কতকগুলি রাজবংশের তালিকা এবং কোন বর্ষে কে কোথায় যুদ্ধ করিল, কোথায় কিরূপে জয় পরাজয় হইরা কেবল এই সঁকল ঘটনাকে আমাদের পূর্ব পুরুষের ইতিহাস বলিয়া মনে করিতেন না। র্তাহারা প্ৰতি সমাজ, প্ৰতি জাতি, প্ৰতি গোষ্ঠী, এবং প্ৰতি শ্রেষ্ঠ বংশের অভু্যাখান ও পতনের ইতিহাস আদরের সহিত কীৰ্ত্তন করিতেন । এইরূপে এই বঙ্গ দেশে মহারাজ শশাঙ্কের সময় হইতে এক বিশাল সাৰ্ব্বজনীন ইতিহাস সঙ্কলিত হইয়াছে। কোন সময়ে কোন রাজার আশ্রয়ে কোন স্থানে কোন সমাজের অভু্যদয় এবং কিরূপে সেই সেই সমাজের বিস্তৃতি, পুষ্টি ও সমাজবন্ধন সাধিত হইয়াছে, কোন গুণে বা দোষে কোন সময়ে কিরূপে কোন সমাজের উন্নতি বা অবনতি ঘটিয়াছে, কি সামাজিক নিয়মে কোন কোন ব্যক্তি সমাজপতি, গোষ্ঠীপতি বা দলপতি অথবা সমাজে উচ্চ সন্মানলাভ করিয়াছেন,- * কিরূপ অসদাচরণে, কি কারণে সনাতন সদাচার বিসর্জনে, কি প্রকায় অনুদার নীতির অনুসরণে কোন কোন সমাজের অধঃপতন ঘটয়াছে, কোন সময়ে কিরূপ ধৰ্ম্মবিপ্লবে কোন কোন শ্রেষ্ঠ জাতি অধঃপতিত এবং কোন কোন হীন জাতি উন্নত হইয়াছে, তাহার যথেষ্ট পরিচয় দিবার ধারাবাহক সামাজিক ইতিহাস আমাদের আছে । সমাজের গতি, পদ্ধতি ও রীতি নীতির অনুসরণ করিয়া শত শত বঙ্গীয় জেনোফন বঙ্গীয় সমাজের সেই অতীত কাহিনী লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। সুসভ্য যুরোপীয় বৈজ্ঞানিকগণ যে সাৰ্ব্বজনীন ইতিহাসের আবশ্যকতা হৃদয়ঙ্গম করিলেও আজও য়ুরোপীয় সমাজে যে ইতিহাস সঙ্কলনের সুযোগ আসে নাই- অর্থাৎ যাহা অপর দেশে নাই বলিলেই হয়, তাহা আমাদের আছে, ইহা কম গৌরবের বা কম | ९ ८छ् । পূর্বেই বলিয়াছি যে ইংরাজপ্রভাব বিস্তারের সহিত আমরা সেই প্ৰকৃত জাতীয় ইতিহাসচর্চায় বিমুখ হইয়াছি। আমাদের অমনোযোগিতায় ও অবহেলায় শত শত সামাজিক ইতিহাস নষ্ট করিয়াছি। তথাপি এই ধ্বংসোন্মুখ অবস্থা হইতে ৮, ১০ বর্ষের সামান্য চেষ্টায় আমি যে অতি সামান্য অংশ যাহা সংগ্ৰহ করিয়াছি, তাহার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিলে ও আপনার বিস্মিত হইবেন, সন্দেহ নাই। তাহা প্ৰায় ৫০০ খণ্ডে বিভক্ত, ২০ খানি মহাভারতের ন্যায় বৃহৎ হইবে। তাহা সাধারণতঃ কুলগ্রন্থ নামে প্ৰসিদ্ধ। ব্ৰাহ্মণাদি জাতি বা সমাজ নির্বিশেষে ঐ সকল সামাজিক গ্ৰন্থ উপযুক্ত সমাজতত্ত্বজ্ঞের হস্তে লিপিবদ্ধ হইয়াছে। ঐ সকল কুলগ্ৰন্থ হইতে আমরা জানিতে পারি যে, বৰ্ত্তমান বঙ্গের শ্ৰেষ্ঠ জাতিসমূহের মূল পুরম কেহই এই বাঙ্গালার আদিম অধিবাসী নহে। কি বৈদিক, কি আবৈদিক, কি কুলীন কি শ্ৰোন্ধিয়, কি মৌলিক কি অমৌলিক, কি সিদ্ধ কি সাপ্য ব্ৰাহ্মণ হইতে নবশাখ পৰ্য্যন্ত সকল