পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন। ১৩০, ১] ৬/ ভূদেব মুখোপাধ্যায়। > o" গৌরব করিতে পারে। যে দশগুণোত্তর সংখ্যা প্ৰণালীর উপর গণিতশাস্ত্রের ভিত্তি স্থাপিত হইয়াছে, তাহ হিন্দুর উদ্ভাবিত ; ষে প্রভাববর্তী চিকিৎসাবিদ্যা এক সময়ে সুদূৱবৰ্ত্তী জনপদের পণ্ডিতদিগকে বিস্মিত করিয়া তুলিয়াছিল, তাহ হিন্দুর প্রতিষ্ঠিত, যে “সৰ্ব্বং খন্বিন্দং ব্ৰহ্ম” “সৰ্ব্বভূতময়ে। হি সং” প্ৰভৃতি জ্ঞানগর্ভ বাক্য সৰ্ব্বপ্রকার সঙ্কীর্ণতা পরিহারের মহামন্ত্র স্বরূপ হইয়াছিল, তাহা সৰ্ব্বপ্রথম হিন্দুর মুখ হইতে উচ্চারিত। এইরূপে হিন্দু অনেক বিষয়ে সমগ্ৰ পৃথিবীর উপদেষ্টা। ভূদেব হিন্দুকে পুনঃসঞ্জীবিত করিবার জন্য হিন্দুর মহত্ত্বের কথা কীৰ্ত্তন করিয়াছেন। অধ্যাপক সীলি এক স্থলে এই ভাবে লিখিয়াছেন- “অতি প্ৰাচীন কালে ভারতে জ্ঞানালোক প্রসারিত হইয়াছিল। ভারতে প্ৰাচীন সভ্যতা ছিল, অনন্তরত্নের আকার অনুপম প্ৰাচীন মহাকাব্য ছিল, জ্ঞান-গরিমার ভিত্তিস্বরূপ দর্শনশাস্ত্ৰাদি ছিল। ঐ জ্ঞানালোকই এক সময়ে ধীরে ধীরে প্রসারিত হইয়া প্ৰতীচ্য ভূখণ্ডের একাংশ আলোকিত করিয়াছিল। ইংরেজি ভারতে যে আলোক সমৰ্পণ করিয়াছেন, তাহ উজ্জ্বল হইলেও হিন্দুর অধিকতর হৃদয়াকর্ষক ও অধিকতর কৃতজ্ঞতার উদ্দীপক হয় নাই। ঐ আলোক অন্ধকারময় স্থানে যেরূপ উজ্জ্বল হইত, ভারতে সেরূপ হয় নাই। সুতরাং ইংরেজের আনীত আলোক তমোনাশক উজ্জ্বল আলোক নহে । * * * আমরা হিন্দু অপেক্ষা অধিকতর বুদ্ধিকৌশলসম্পন্ন নাহি ; আমাদের হৃদয় হিন্দুর হৃদয় অপেক্ষা অধিকতর প্রশস্ত বা অধিকতর উন্নত নহে। আমরা অজ্ঞাত ও অচিন্ত্যপূৰ্ব্ব ধারণা সম্মুখে রাখিয়া, অসভ্যাদিগকে ষেরূপ বিস্ময়াবিষ্ট করিতে পারি, হিন্দুকে সেরূপ পারি না । হিন্দু তীহার কাব্য লইয়া আমাদের মহত্তমভাবের সহিত প্ৰতিদ্বন্দিতা করিতে পারেন। এমন কি, তঁহার নিকটে অভিনৰ বলিয়া স্বীকৃত হইতে পারে, এরূপ বিষয় আমাদের ৰিজ্ঞানেও অল্প আছে।” এক জন উদার-প্রকৃতি ইংরেজ এইরূপে হিন্দুর গৌরব ঘোষণা করিয়াছেন। ভূদেব প্রকৃত হিন্দু, প্রকৃত স্বদেশপ্রেমিক, ‘স্বৰ্গাদপি গরীয়সী” জন্মভূমির উন্নতিসাধনে প্রকৃত চিন্তাশীল। এইজন্স, ভূদেব ধীরে ধীরে সেই মহিমান্বিত মহাজাতির অবলম্বনীয় কৰ্ত্তব্য পথ নির্দেশ করিয়া দিয়াছেন। কেহ কেহ তাহার বিরুদ্ধবাদী হইতে পারেন, তাহার কোন কোন সিদ্ধান্ত কাহারও নিকটে অপসিদ্ধান্ত বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে, কেহ কেহ তাহার প্রদর্শিত যুক্তির অনুমোদন না। করিতে পারেন, কিন্তু তাহার বিদ্যাবুদ্ধি, লিপিক্ষমতা, বিচারপটুতা সৰ্বোপরি তাহার হৃদয়ের সাধুতার বোধ হয়, কেহই অনাদর করিবেন না। জ্ঞান গভীরতায়-স্বজাতিহিতৈষিতায় তিনি চিরস্মরণীয় হইয়া থাকিবেন। তিনি জাতীয় সমাজের উপকারের জন্য পাশ্চাত্যসমাজের দোষ প্ৰদৰ্শন করিলেও পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের অপ্রিয় হয়েন ( Seeley, Expansion of England, p. 244,