পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कान् >७० »] সাহিত্য-পরিষদ-পত্রিকা । S ( এতকাল জ্ঞানোেপার্জন করিলেন, তঁহাদের সমক্ষে উপার্জিত জ্ঞানের পরিচয় দিয়া চরিতার্থ হইতে পারিবেন না । এরূপ ধারণা সুবুদ্ধি বা দূরদর্শিতার পরিচায়ক নহে। কেবল আত্মম্ভরিতাপ্ৰকাশের জন্য কেহ কখনও জ্ঞানোপার্জনে প্ৰবৃত্ত হয় না । স্বদেশীয়দিগের জ্ঞানলাভের পথ প্রশস্ততর করা আপনার জ্ঞানসংগ্রহের একটি প্ৰধান উদ্দেশ্য। পূৰ্ব্বতন রাজপুরুষগণ প্রধানতঃ এই উদ্দেশ্যেই আমাদের সম্মুখে পাশ্চাত্য জ্ঞানভাণ্ডারের দ্বার উদঘাটিত করিয়াছিলেন। সুতরাং সৰ্ব্বাগ্রে এই সাধনায় সিদ্ধি লাভের চেষ্টা করা কৰ্ত্তব্য । পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ যদি দেখেন যে, তাহারা র্য হাদিগকে আপনাদের জ্ঞানীরত্বে ভূষিত করিয়াছেন, তাহারাই এখন তঁহাদের জাতীয় ভাষাকে শ্ৰীসম্পন্ন করিয়া তুলিয়াছেন, তাহা হইলে সেই পণ্ডিতসমােজ আপনি হইতেই তঁহাদিগকে সাপুবাদ দিবেন। এই সাধুবাদই শিক্ষিত সম্প্রদায়ের প্রকৃত পুরস্কার । র্যাহারা বাঙ্গালাভাষার আলোচনায় আত্মোৎসর্গ করিয়াছেন, তঁহাদের কেহ কেহ পাশ্চাত্য পণ্ডিতমণ্ডলীতে এই ভাবে পুরস্কৃত হইয়াছেন। ইংলণ্ডের সর্বপ্রধান পুরাবৃত্তবিৎ এক সময়ে বিভিন্ন দেশের পণ্ডিতগণের সমক্ষে মুক্ত কণ্ঠে গবেষণা পূর্ণ বাঙ্গালা গ্ৰন্থাবলীর প্রশংসা করিয়াছিলেন। যে সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস-লেখক আমাদের দেশে সাহিত্য গুরুর সম্মানিত পদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, অধিক দিন অতীত হয় নাই, যাহার বিয়োগে সৰ্ব্বত্র গভীর শোকের উচ্ছাস পরিলক্ষিত হইয়াছে, তাহার গ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদ পড়িয়া ইংলেণ্ডের পণ্ডিত সম্প্রদায় বিস্ময়ে বিমুগ্ধ হইয়াছিলেন, এবং বাঙ্গালা ভাষার ঈদৃশ সম্পত্তি দর্শনে মূল গ্রন্থকারকে হৃদয়ের সহিত সাধুবাদ দিয়াছিলেন । বাঙ্গালা ভাষায় পাণ্ডিত্য, গবেষণা বা রচনাকৌশল প্ৰকাশ করিলে, এইরূপে ভিন্ন দেশেও সম্মানলাভ করিতে পারা যায়। দামুন্যার দরিদ্র কবি যখন দুঃসহ দারিদ্র্যের কঠোর পীড়নে মৰ্ম্মাহত হইয়া স্বীয় কাব্যপ্রণয়ন করেন, তখন বোধ হয়, তিনি স্বপ্নে ও ভাবেন নাই যে, "র্তাহার কাব্য সাহিত্যসমাজে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করিবে, এবং তদীয় অপূর্ব ও অকলঙ্ক কবিত্বসম্পত্তি সুদূর ইংলণ্ডের সাহিত্যসেবককেও বিমুগ্ধ করিয়া তুলিবে । কালের পরিবর্তনে অসম্ভাবিত বিষয়ও সন্তাবিত হইয়া থাকে । কালের পরিবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের জাতীয় সাহিত্যের পরিচর্য্যাও এইরূপ গৌরবান্বিত হইয়া উঠিতে পারে । শিক্ষিত সম্প্রদায় যদি স্বদেশীয় ভাষার অনুশীলনে প্ৰবৃত্ত হয়েন, তাহা হইলে পাঠকের অভাব হইবে না। বরং পূর্বাপেক্ষা পাঠকসংখ্যার বৃদ্ধি হইবে । কিন্তু যাহাতে বাঙ্গালা ভাষার অনুশীলনে যুবকদিগের প্রবৃত্তি জন্মে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তদ্বিষয়ে কিছু করা কীৰ্ত্তব্য হইতেছে। অধিক দিন অতীত হয় নাই, অম্মদেশের যে দূরদর্শী অভিজ্ঞ বিচারপতি বাইস-চানসেলরের পদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, তিনি একবার বিদ্যালয়ের উপাধিন্দানের সভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে বাঙ্গালা ভাষা অনুশীলনের আবশ্যকতা প্রতিপন্ন করেন। তঁহার বক্তৃতার সেই অংশ এস্থলে উদ্ধ ত হইতেছে :-