পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दशलिों दूbe । যিনি যে বিষয় লিখুন না কেন, অগ্ৰে ভাষার প্রতি র্তাহার লক্ষ্য রাখা উচিত। যে ভাষা মৰ্ম্মস্পর্শিনী নয়, যে ভাষায় সরলভাবে মনােগত ভােব পরিস্ফুট না হয়, অধিকন্তু যে ভা ;অশ্লীলতায় কলুষিত, অর্থঘটিত গোলযোগে অনধিগম্য এবং দুরুচ্চাৰ্য্য শব্দে উৎকট হইয়া উঠে, সে ভাষায় সাহিত্যের কোনরূপ উন্নতি হয় না। সাহিত্যসেবক ও সে ভাষায় গ্ৰন্থাদি লিখিয়া, পরের উপকার করিতে পারেন না। মনোগত ভাব প্রকাশের জন্য ভাষার প্রয়োজন হয়। যাহাতে মনােগত ভাবটি পরিস্ফুট হয়, সংযতভাবে সেই ভাষার প্রয়োগ করাই উচিত। ইহার পর শব্দের লালিত্য, মাধুৰ্য্য এবং শব্দযোজনার পারিপাট্যের দিকে লেখকের সবিশেষ দৃষ্টি থাকা বিধেয়। জনসাধারণকে জ্ঞানবৈভবে সমৃদ্ধ করা গ্ৰন্থপ্রণয়নের মুখ্য উদ্দেশ্য। যে গ্রন্থের ভাষা সৌন্দৰ্য্যসম্পন্ন নয়, যে গ্রন্থের ভাষায় সাধারণের হৃদয় আকৃষ্ট হয় না, এবং যে গ্রন্থের ভাষা সাধারণে অনায়াসে বুঝিতে পারে না, সে গ্ৰন্থ প্রণয়নের উদ্দেশ্য সফল श्श्न क्रा । এখন বাঙ্গালা রচনার সম্বন্ধে শ্রেণীভেদে মতভেদ দৃষ্ট হয়। এক শ্রেণীর পণ্ডিত বাঙ্গালাকে নিখুত সংস্কৃতভাবে চালাইতে চাহেন। ইহারা গবীর পরিবৰ্ত্তে গাভী লিখিলে নাসিক সঙ্কুচিত করেন, সর্জনের পরিবর্তে সৃজন লিখিত হইলে, ব্যাকরণের অবমাননায় ম্রিয়মাণ হয়েন, মাতাপিতৃভক্তির পরিবর্তে পিতৃমাতৃভক্তির প্রয়োগ দেখিলে হা হতোহস্মি করিয়া থাকেন। ইহার উপর যদি ইহার কোন সহজবোধ্য ও চিরপ্ৰচলিত শব্দকে সংস্কৃত শব্দের সহিত এক পঙক্তিতে গ্রথিত দেখেন, তাহা হইলে ইহাদের হন্তে লেখকের আর নিস্কৃতি লাভ হয় না। লেখকের লিপি প্ৰণালী ইহাদের কঠোর সমালোচনার বিষয়ীভূত হইয়া উঠে। আর এক শ্রেণীর পণ্ডিত প্ৰথমোক্ত শ্রেণীর ঠিক বিপরীত মতের পরিপোষক। যে কোনরূপে হউক, ইহারা সংস্কৃত শব্দগুলিকে ভাষা হইতে একবারে নিষ্কাশিত কৱিতে পারিলেই সৰ্ব্ববিষয়ে বাঙ্গালার চরমোন্নতি হইল বলিয়া, মনে করেন। ইহাদের মতে স্বর্ণ, বৰ্ণ, ভ্ৰাতা প্রভৃতি শব্দগুলির চির-নিৰ্ব্বাসন বিধেয়। ইহারা বিশেষণভেদে লিঙ্গভেদ মানিতে প্ৰস্তুত নহেন, সমাসভেদে সংস্কৃত ব্যাকরণের চির-প্রচলিত নিয়মরক্ষা করিতেও সম্মত নহেন, বা বাঙ্গালা ভাষায় যে সকল সংস্কৃত শব্দের প্রয়োগপ্ৰণালী বহুকাল হইতে নিৰ্দ্ধারিত রহিয়াছে, তৎসমুদয়ের রক্ষার জন্য যত্নশীল নহেন। ইহারা কাঞ্চন ছাড়িয়া কাচের জন্য লালায়িত। ইহাদের নিকট বহুমূল্য রত্নাভরণ অপেক্ষা কড়ি, শম্বুক প্রভৃতির অলঙ্কারেরই গৌরব অধিক। ইহারা আপনাদের মাতৃভাষাকে এই অপূৰ্ব্ব অলঙ্কারে শোভিত করিতে করিতে পারিলেই সৰ্বাৰ্থ সিদ্ধ হইল বলিয়া মনে করেন। সংস্কৃত ভাষারূপ খনির অভ্যন্তরে যে সকল চিরদীপ্তিময় অমূল্য রত্নরাজি নিহিত রহিয়াছে, ইহারা তৎসমুদ্ৰায়ের উদ্ধার করিয়া,