পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\S)ye সাহিত্য-পরিষদ, পত্রিকা । [थांबणी স্বজাতীয় সমাজ সংক্রান্ত কোন একটা সামান্য প্রশ্ন উপস্থিত করিলেই কণ্ঠশুিষ্ক হইয়া পড়ে,--শরীর শিহরিয়া উঠে। জিজ্ঞাসা করি, আমার মত লোককে আপনারা কৃতবিদ্য বলিয়া গ্ৰহণ করিতে প্ৰস্তুত আছেন কি না ? আমি দেশ মধ্যে কৃতবিদ্য নামে পরিচিত, শিক্ষা-সমাজে সম্মানিত,-অথচ স্বদেশীয় সাহিত্যের সহিত আমার আদৌ সাক্ষাৎ নাই। জিজ্ঞাসা করি,-সংসারে ইহা অপেক্ষা লজ্জাজনক কথা আর কি হইতে পারে ? আমি মাতৃভক্ত সন্তান বলিয়া প্ৰখ্যাত হইতে চাহি, অথচ আপনার মাকে মা বলিয়া স্বীকার করি না,-এমন কি মাতৃ-মুখ জন্মেও একবার দর্শন করিতে উদ্যত হই না । বড়ই দুঃখের বিষয়,-এতদ্দেশে এইরূপ মাতৃভক্ত সন্তানের সংখ্যাই অধিক,-এইরূপ কৃতবিদ্যের দলই প্ৰবল ! জাতীয় সাহিত্যের আলোচনা বিনা মানুষ যেমন বিজাতীয় সাহিত্যালোচনার অধিকারী ও অনুকুল হয় না, সেইরূপ কৃতবিদ্য নামে আখ্যাত হইবারও উপযুক্ত হইতে পারে না । তৃতীয়তঃ-জাতীয় সাহিত্য সমাজের নিম্নশ্রেণীস্থ লোকদিগের চরিত্রের উৎকৰ্ষসাধক ও জ্ঞানোন্নতিকারক । সকল জাতি ও সকল দেশের ভিতরেই এক দল লোক দেখিতে পাওয়া যায়,-যাহারা ইচ্ছা করেন, জ্ঞান ও ধৰ্ম্মালোক সমাজের উন্নত শ্রেণীর মধ্যেই বিকীর্ণ হউক,-মনের উন্নত ভাব এবং চরিত্রের স্বৰ্গীয় বিকাশ কেবল সমাজের শিরো ভাগেই বিকশিত হইতে থাকুক ; আর সমাজের নিয়শ্রেণীস্থ অর্থাৎ তন্তবায়, কৰ্ম্মকার, সূত্রধর, কৃষক প্ৰভৃতি সম্প্রদায়ান্তৰ্গত ব্যক্তিরা কেবল আপনি আপন পুরুষ-পারস্পরাগত বৃত্তি ব্যবসায়ে নিযুক্ত থাকিয়াই কালাতিপাত করুক। আমি তঁহাদিগের এই অযথা আপত্তি বা একান্ত অসহনীয় আবদারকে সৰ্ব্বাংশেই অযুক্তিযুক্ত বলিয়া বিবেচনা করি । মানুষমাত্রেই বিধাতার সন্তান,-মানুষমাত্ৰেই বিধাতৃপ্রদত্ত অধিকারে অধিকারী। মানুষমাত্রেই শিক্ষা ও সাধনার সাহায্যে আপন আপন অন্তর্নিহিত জ্ঞানের অক্ষুরকে বৃক্ষে পরিণত করিবে, ক্রমে সেই বৃক্ষকে শাখা প্ৰশাখায় সুশোভিত করিবে, এবং অবশেষে সেই শাখা-প্ৰশাখা-সমন্বিত জ্ঞান-বৃক্ষ অশেষবিধ ফল ফুলের উৎপাদক হইয়া উঠিলে, তদ্বারা আপনার ও অপরের শান্তিসুখ বিধান করিতে থাকিবে, ইহাই বিশ্ববিধাতার ইচ্ছা ও আদেশ । এই ইচ্ছা সিদ্ধ না হইলে,-এই আদেশ প্রতিপালন করিয়া না চলিলে, সমাজ অশান্তির কারণ হইয়া উঠে,-সংসার দুঃখদুর্গতির আকর হইয়া পড়ে। জ্ঞান ও ধৰ্ম্মকে শ্রেণীবিশেষের মধ্যে অবরুদ্ধ করিয়া রাখিবার অধিকারও কাহার নাই,-উন্নত চিন্তা ও উন্নত ভাবকে সম্প্রদায়বিশেষের হস্তে ন্যস্ত করিয়া রাখিবার সামৰ্থ্য কাহারও নাই। ধৰ্ম্মালোক সমাজের সকল অংশে-সৰ্ব্বত্র প্রসারিত করিয়া দাও, জ্ঞানভাণ্ডারের দ্বার সর্বসমক্ষে উন্মুক্ত করিয়া রাখ, তন্তবায় ইচ্ছা করিলে সেই দ্বারে প্রবিষ্ট হউক এবং যথাশক্তি জ্ঞান আহরণ পূর্বক আপনার চিরাগত বৃত্তির অবলম্বনে কালাতিপাত করুক। ইচ্ছা করিলে কৃষকপুত্ৰও সেই দ্বারে প্রবেশ করিয়া আপ