পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ग्नन >७०१०] জাতীয় সাহিত্যের আবশ্যকতা কি ? 8○ আমি বলিতেছি,-এই বিজাতীয় ভাবপ্রবাহ হইতে আমাদিগের দেশ ও সমাজকে রক্ষা করিতে হইলে,-আমাদিগের মধ্যে জাতীয় ভাবের উদ্বোধন ও আরাধনা আরম্ভ করিতে হইলে, আমাদিগের পক্ষে জাতীয় সাহিত্যের আলোচনা যার পর নাই আবশ্যক । অষ্টমতঃ-জাতীয় সাহিত্য জাতীয় গৌরবের উদ্দীপক। জাতীয় গৌরব কি ? আমরা একটা জাতি,-জগতের জাতীয় মহাসমিতি মধ্যে অপরাপর জাতির সহিত আমরাও আসন পাইবার উপযুক্ত, জগতের নিকটে আমাদিগের কিছু বলিবার ও শিখাইবার আছে, ইত্যাদি জাতিগত ভাবের উপরেই জাতীয় গৌরব নির্ভর 3f CSC I & 3" (83 as Giri in it frt. ,-'a nation is judged by its great men” অর্থাৎ কোন জাতিকে বুঝিতে হইলে আগে সেই জাতির মহাপুরুষদিগকে বুঝা উচিত। মহাপুৰুষেরা যেমন জাতিকে প্ৰকাশিত করেন, জাতীয় সাহিত্য সেইরূপ মহাপুরুষদিগকে প্ৰকাশিত করে। অতএব ইহা স্বীকার করিতে হইবে,-জাতীয় সাহিত্য কি মহাপুরুষদিগের গৌরব, কি জাতীয় গৌরব, সকল গৌরবের কারণ। জাতীয় সাহিত্য আছে বলিয়াই ইতালি আজ পৃথিবীর সমক্ষে দান্তে ও প্ৰেত্রার্কের নাম উচ্চারিত করিয়া আস্ফালন করিতেছে । জাতীয় সাহিত্য আছে বলিয়াই আজি জৰ্ম্মণি গোটে ও লেছিঙ্গের নাম কীৰ্ত্তিত কারিয়া আপনাদিগের গৌরব-পতাকা উডীন করিতেছে। জাতীয় সাহিত্য আছে বলিয়াই আজ ইংলণ্ড সেক্সপীয়রা ও মিল্টন এডিসন ও জনসনের নাম ধ্বনিত করিয়া ধরণীমণ্ডলে বিদ্যাগৌরব ও জ্ঞানগৌরব সম্বন্ধে আপনাদিগকে শ্রেষ্ঠ বলিয়া প্রচারিত করিতেছে। আর জাতীয় সাহিত্য ছিল বলিয়াই পরপদবিন্দলিত ও পরানু গৃহীত হিন্দু। এই অবর্ণনীয় অধঃপতনের দিনেও বাল্মীকি ও ব্যাস এবং কালিদাস ও ভবভূতির নাম উচ্চারিত করিয়া আপনাদিগের গৌরবগীতি গান কবিতেছে। আমি স্বীকার করি,-আমাদিগের জাতীয় সাহিত্য এখন অপরিস্ফাটঅমার্জিত ও দৈন্যদশাগ্ৰস্ত । আমি স্বীকার করি,-আমাদিগের জাতীয় সাহিত্য এখন শক্তিতে ও সম্পদাংশে অনেক পশ্চাতে পড়িয়া রহিয়াছে। তাহা হইলেও কি আমরা কবিকঙ্কণ ও ভারতচন্দ্র এবং মাইকেল ও হেমচন্দ্রের নামে স্পৰ্দ্ধা করিতে পারি। না ? এবং রামমোহন, অক্ষয়কুমার, বিদ্যাসাগর, কালীপ্ৰসন্ন, বঙ্কিমচন্দ্ৰ, অক্ষয়চন্দ্ৰ, চন্দ্ৰনাথ, রজনীকান্ত ও দ্বিজেন্দ্ৰনাথ প্রভৃতির নামে আমাদিগের গৌরব-পতাকা একবারের জন্যও উডীন করিতে সমর্থ হই না ? অতএব বাঙ্গালী, যদি জাতীয় গৌরব রক্ষা করিতে ইচ্ছা কর, তাহা হইলে কায়মনে জাতীয় সাহিত্যের সেবায় প্রবৃত্ত হও । জাতীয় সাহিত্যের নবম বা শেষ আবশ্যকতা ধৰ্ম্মানুশীলনী বৃত্তির পোষণ ও প্রসারণ । বে বৃত্তি লাভ করিয়া মানুষ মৰ্ত্ত্যলোক-বাসী হইয়াও স্বর্গের স্বাদগ্রহণে সমর্থ হইতেছে, যে বৃত্তি আছে বলিয়া মানুষ একবারে মনুষ্যত্ববিহীন হইয়া পড়িতেছে না, এবং যে বৃত্তি ইহকাল, পরকাল,-অনন্তকালের সহিত অচ্ছেদ্য সম্বন্ধে বদ্ধ করিয়া মানুষকে অনির্বাচনীয়