পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Šტ সাহিত্য-পরিষদ-পত্রিকা । [শ্ৰাবণ সম্বন্ধে বল, প্রাচীন ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে বল, আমাদের নিজের ধনের একটু স্পৰ্দ্ধা করিতে শিখিয়াছি। আজ আমরা কেবল বিদেশীয়দিগের স্তুতিবাদক নহি, দেশীয় আচারব্যবহারে বীতরাগ নহি, দেশীয় ইতিহাসে মুর্থ নহি, এবং দেশীয় ধৰ্ম্মে অবহেলা করি। না। আমাদের শরীরে যেন একটু বল হইয়াছে, মনে একটু স্পৰ্দ্ধা হইয়াছে, জাতীয় ধন। চিনিয়াছি, জাতীয় ধৰ্ম্মের মৰ্ম্ম শিখিয়াছি। এটী উন্নতির লক্ষণ, মঙ্গলের লক্ষণ। আমরা যেন ক্রমশঃ এই পথে অগ্রসর হইতে থাকি । ܐ এ উন্নতি যে বঙ্কিমচন্দ্ৰ দ্বারা সাধিত, তাহা নহে। এটী। কতকটা ইংরাজি শিক্ষার ফল, কতকটা দেশের ও সময়ের উন্নতি, কিন্তু এ উন্নতিও বঙ্কিমচন্দ্ৰে পূৰ্ণ বিকাশ পাইয়াছিল। তঁহার জীবনের শেষ দশ বৎসর তিনি ধৰ্ম্মসম্বন্ধে অনেক আলোচনা করিয়াছিলেন। এ সম্বন্ধে তাহার সমস্ত গ্ৰন্থ আমি পড়ি নাই, এবং সকল বিষয়ে তঁ ।াহার কি মত, তাহাও জানি না । কিন্তু মতামতের আলোচনা এখানে করিতেছি না । তিনি হিন্দুধৰ্ম্মের ষেরূপ আলোচনা করিয়াছেন, তাহা আধুনিক সময়ের একটী লক্ষণ,-একটী চিহ্ন স্বরূপ। অনৈক্য স্থলে ঐক্য সংঘটন, অনুদার মত ও আচারের স্থলে উদার মত ও আচার সংস্থাপন, নিজস্ব অনুষ্ঠানের স্থলে প্রাচীন ধৰ্ম্মের সঞ্জীবনী শক্তি প্রচারকরণ, অজ্ঞানতার ও মুর্থতার স্থলে হিন্দুধৰ্ম্মের জ্ঞানবিতরণ, অবনতির স্থলে উন্নতির পথ প্রদর্শন,-এইরূপ ইচ্ছা, এইরূপ ভাব, এইরূপ আশা, আজি বঙ্গসমাজে কিছু কিছু অনুভূত হইতেছে। বঙ্কিমচন্দ্রের ধৰ্ম্ম-সম্বন্ধীয় গ্রন্থগুলি এই ইচ্ছা, এই ভাব ও এই আশাস্ত্ৰ বিকাশ মাত্র। বঙ্গদেশীয় হিন্দুগণ ক্রমশঃ ঐক্যলাভ করিতে শিখিতেছেন,-প্ৰাচীন ধৰ্ম্ম-জ্ঞান এবং উদার আচার ও অনুষ্ঠান। সেই ঐক্যসাধনের এক মাত্র মন্ত্র। শ্ৰী রমেশচন্দ্ৰ দত্ত।