পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য-পরিষদ-পত্রিকা । [শ্রাবণ حوb যে বীজ রোপিত হইয়াছে, কেবল এখানে ওখানে তাহার অন্ধুরোদগম ও ফল হইতেছে কেন ? “এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যাইতে পারে, আমাদের উপাধিধারীদিগের উদেশ্য কৰ্ম্মগত উদ্দেশ্য। তাহারা প্ৰধানতঃ সংসারে আপনাদিগকে প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্যই উপাধিলাভের চেষ্টা করিয়া থাকেন । ইহা যথার্থ কথা । ইহা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে যেরূপ যথার্থ, অপরাপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষেও সেইরূপ যথার্থ। আমাদের উপাধিধারিগণ কৰ্ম্মক্ষেত্রে সাধুতাসহকারে ও পরিপাটীরূপে আপনাদের কৰ্ত্তব্যসম্পাদন করিাতেছেন। তঁহার দেশের শাসনসংক্রান্ত কাৰ্য্যনির্বাহ করিতেছেন ; বিচারাসনে বসিয়া তাহারা বিচার কাৰ্য্যে যোগ্যতার পরিচয় দিতেছেন ; তাহারা ব্যবসায়ক্ষেত্রে ব্যাপৃত রহিয়াছেন ; বিদ্যালয়সমূহে তাহারা ভবিষ্যবংশীয়দিগকে আপনাদের স্থানপরিাগ্রহের জন্য সুশিক্ষিত করিয়া তুলিতেছেন। ইহা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপযোগিতার প্রকৃষ্ট পরিচয়। কিন্তু ইহা অপেক্ষা আরও কিছু আছে। প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ কৰ্ম্মক্ষেত্রে এইরূপ উপযোগিতারই পরিচয় দিয়া থাকে। কিন্তু ঐ সকল বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা আরও কিছু কাৰ্য্য সম্পন্ন হয়। অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় হইতে যে সকল ছাত্র বহির্গত হয়েন, তাহারা জ্ঞানালোচনায় কখনও বিরত থাকেন না। তঁাহারা সংসারে প্রবেশ করেন, বিষয়কৰ্ম্মে ব্যাপৃত থাকেন; কিন্তু তঁহাদের অবকাশকাল মনোনীত শাস্ত্রের অনুশীলনে অতিবাহিত হয়। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাহারা শিক্ষিত হয়েন, কৰ্ম্মক্ষেত্রে তাহারা ভিন্ন ভিন্ন কৰ্ম্মে নিয়োজিত থাকেন ; তথাপি যে বিষয়ের অনুশীলনে তঁহাদের আমোদ জন্মে, তাহারা সেই বিষয়ের অনুশীলন করেন। আমাদের উপাধিধারীদিগের মধ্যে এই ভাব এত অল্প কেন ? ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তুলনায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদিগের এইরূপ অনুশীলনপ্রবৃত্তি অতি অল্প। আমরা কিছুমাত্ৰ কৃপণতা না করিয়া, মুক্তহস্তে শিক্ষার বীজরোপণ করিয়াছি। ইহা কি বীজের দোষ ? বা রোপণ প্ৰণালীর দোষ ? অথবা যে ক্ষেত্রে বীজ রোপিত হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রের দোষ ?” প্ৰতিনিধি চানন্সেলর মহোদয়, এইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদিগের শাস্তানুশীলনে অপ্ৰবৃত্তির নির্দেশ পূৰ্ব্বক উহার কতিপয় আরোপিত কারণের উল্লেখ করিয়াছেন । শিক্ষাপ্রণালী, বহুসংখ্য পাঠ্য পুস্তকের নিৰ্দ্ধিারণ, পাঠকশ্রেণীর অভাব প্রভৃতি কারণ একে একে উল্লিখিত হইয়াছে। কিন্তু এই কারণসমষ্টির সকলগুলিই যে, ছাত্রদিগের শাস্ত্রাসক্তি ও জ্ঞানগভীরতার প্রতিকূলতাসাধন করিতেছে, ইহা তিনি স্বীকার করেন নাই । যেহেতু যাহাতে নির্দিষ্ট বিষয়ে যথোচিত জ্ঞান জন্মে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় তদৃবিষয়ে সবিশেষ মনোযোগী হইয়াছেন। পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা অধিক ; এই ভারে শিক্ষার্থীদিগের হৃদয় সম্প্রসারিত না হইয়া সঙ্কুচিত হইয়া পড়িতেছে ; একথা স্বীকাৰ্য্য। শেষে পাঠক,