পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিঞ্চিৎ লিলিও,হতে হয় । সিঁদুরি গাছের কাছে গভীর রাতে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে বলবেন, আমায় ক্ষমা করে দাও, আমি তোমারই মতন অসহায় । আমি কখনও আত্মহত্যা করব না। আমি আখতার হাজীকে একটা সন্তান উপহার দেব । তুমি পুষ্পিত হও । বলতে-বলতে সাদিকুল উঠে দাঁড়ালেন, শিরিন সাথে-সাথে বাধা দিয়ে বললেন-উঠছেন কেন ? বসুন, চা খেয়ে যাবেন । শিরিন হঠাৎ যেন খুশি হয়ে উঠেছেন। খাট ছেড়ে নেমে রান্নাঘরে চলে গেলেন । ছোটোরাও খেলতে চলে গেল । বিকাল হয়ে আসছে । চা খেতে-খেতে মামা আরো কিছু গভীর কথা তুললেন । বললেন-লিলির একটা প্রতীকমূল্য আছে মেয়েদের জীবনে। গাছের নিজস্ব কোনো সংস্কার নেই। ধর্ম যা তা-ও খুব প্রিমিটিভ। ক্ল্যান যুগেরও ওপারে পড়ে আছে বৃক্ষ লতাপাত । কারণ ওরা মানুষের চেয়েও পুরনো প্ৰাণ । ওদের আমাদের মতন কোনো গোষ্ঠী বা সাম্প্রদায়িক ধর্ম কখনও ছিল না। আজও নেই। বুঝলে মিনু, একথা গোলোকবাবু কিংবা তোমার বাবা বুঝতে চাইবেন না। কেন বলে তো ? S8--So সাদিক বললেন-করণ উনি মনে করেন শবেকদরের রাতে বৃক্ষলতাপাতা আল্লাকে সিজদা (প্ৰণাম) করে । মোনাজাত (প্রার্থনা) করে । যাঁরা পরহেজগার (নৈষ্ঠিক পূণ্যাত্মা) তাঁরা গভীর রাতে স্বচক্ষে নাকি সেই নামাজপড়া দেখতে পান। তোমার বাবা হাজী আখতার এম. এফ. এ. (মুসলিম লীগ) আমায় পরম বিশ্বাসের সাথে একথা বলেন । আমি সেকথার প্রতিবাদ করিনি কেন জান ? -6कन १ ॐमें कलेि ! মামা বলেন-করণ মানুষ বরাবরই গাছপালার মধ্যে নিজের চৈতন্যকে আরোপ করে। যে যেমন সে ঠিক তেমনি করেই করে । মানুষ সব সময় তার নিজস্ব ক্যাটেগরি অব থটুস, চিন্তার রকমের মধ্যে রয়েছে। তার সব অনুভূতি ওই চিন্তার রকমের মধ্যে বিরাজ করে । লালন ফকির থেকে আইনস্টাইন সবার বেলা একই কথা । জীবনানন্দও গাছের মধ্যে নিজের চৈতন্যকে দেখতে পেতেন। তাঁর একটি গল্প বলি শোনো। উনি অন্য কবিদের একবার অদ্ভুত একটা কথা শুনিয়ে বললেন, আমি অন্ধকারের তরঙ্গ দেখেছি । তোমরা দেখবে ? সত্যিকার তরঙ্গ দেখা যায়। এটা কবিকল্পনা নয়, চক্ষুষ ঘটনা সেটা । অন্য কবিরা ঢাক্ষুষ করতে চাইলেন। চায়ে শেষ চুমুক দিয়ে কাপটা পায়ের কাছে মেঝোয় রেখে সাদিকুল সটান হয়ে চেয়ারে বসলেন। রুমাল বের করে ঘাড় গলা মুখ মুছে প্যান্টের পকেটে ফের ঢুকিয়ে রাখলেন । চশমাটা ঠিকমতন নাকে বসিয়ে আমাদের দিকে প্রসন্ন হয়ে চেয়ে দেখলেন । শিরিন দই চোখে কথাগুলি yor