পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এক টুকরো চিঠি আমার কাঁধে ঝোলানো চামড়ার ভ্যানিটির মধ্যে এক টুকরো চিঠি আছে খুব মারাত্মক ; আমার মা লিখেছেন তাঁর মাসির মেয়ে শিরিনকে । শিরিন আমার মায়ের সতীন ছিলেন । আমার বাবা প্রাক্তন মুসলিম লীগ এম. এল. এ. । শিরিন তাঁরই দ্বিতীয় পক্ষ ছিলেন । মাসি আমার চেয়ে পাঁচ বছরের বড়ো । আমাদের খুব বন্ধুত্ব ছিল । মা শিরিনমাসিকে স্নেহ করতেন । শিরিনমাসির পড়াশুনোয় যথেষ্ট সুখ্যাতি ছিল । স্কুল ফাইনাল পাশ করার পর বাবার সাথে বিয়ে হয়েছিল । ওই অব্দিই পড়াশুনোর ইতি । শিরিনমাসি মায়ের চেয়ে সুন্দরী । বোধহয় আমিও তাঁর মত সুন্দরী নই। বাবা সেই রূপেই মুগ্ধ হয়ে শিরিনকে বিয়ে করেছিলেন । তারপর পাঁচ বছর যেতে না যেতে বাবার সাথে মাসির বিচ্ছেদ হয়ে গেল । কেন যে বিচ্ছেদ হয়েছিল, সে-এক অতর্কিত বিস্ময় । আমি তখন ক্লাশ নাইনের ছাত্রী । পুজোর ছুটির পর অ্যানুয়াল পরীক্ষা । রাত জেগে পড়াশুনা করতে হয় । শিরিন অঙ্কে এত ভালো ছিলেন যে মনে হত মহিলা যেন-বা অঙ্কের জাহাজ । উনি বলতেন, অঙ্কের জন্য মেধার খবরদারি লাগে না, চাই অভ্যাস। যদিও হায়ার ম্যাথমেটিকস ইজ নট এভরিবডিজ কাপ অব টী । তথাপি প্র্যাকটিস চালিয়ে গেলে খোদাও ফেল করাতে পারে না । ইউ মাস্ট অবটেইন অ্যাট লীস্ট এইটি পারসেনটু ইন এরিথমেটিকস । আই অ্যাম এ “শিওর সাকসেস” ইন ইওর হ্যানড । বাট আই অ্যাম নট ইওর টীচার । আই অ্যাম এ পুওর গার্ল, ফুল অব কনট্রাডিকশনস, মাই পয়েন্ট ইজ জিরো, রেজালট মুক্তিরে, মাই আনসার ইজ নীল। এই খাবার ইংরজি বলা তাঁর অভ্যাস বলতে-বলতে শিরিন কেঁদে ফেলতেন । আমি কাঁচা অঙ্কের ছাত্রী, পরীক্ষায় সে বছর ৮২ নম্বর পেয়ে থার্ড হয়েছিলাম । আজ ইলেভেন ক্লাশে আর্টস-এর ছাত্রী উইমেনস কলেজে। আই অ্যাডমিন্ট, আই নো, হায়ার ম্যাথমেটিকস নট ইজ এভরিবডিজ কাপ অব টী । কিন্তু শিরিনের কাছে অঙ্ক ছিল এক গেলাস 〉●。