ইতিহাসেও স্থানলাভ করিয়াছে; এবং তাহাকে মূলভিত্তি করিয়া, ইতিহাস-লেখকগণ এখনও বর্ণনালালিত্য বিস্তার করিবার জন্য সকলকে শুনাইয়া বলিতেছেন যে, “সিরাজদ্দৌলার নৃশংস স্বভাবের আর অধিক কি পরিচয় দিব? তাঁহার ভয়ে মুর্শিদাবাদের প্রকাশ্য রাজপথেও লোকে নিরাপদে চলাচল করিতে পারিত না, তিনি স্বহস্তে রাজপথে নিরপরাধ নাগরিকদিগকে খণ্ড খণ্ড করিয়া কাটিয়া ফেলিতেন!”[১]
হোসেন কুলীর হত্যাকাণ্ডের জনশ্রুতি মুখে মুখে বিস্তৃতিলাভ করিয়া এতই রূপান্তরিত হইয়া পড়িয়াছে যে, একজন সুলেখক তাহার উল্লেখ করিতে গিয়া একখানি মাসিক পত্রিকায় লিখিয়া গিয়াছেন যে,— “হোসেনকুলী সিরাজদ্দৌলার শিক্ষাগুরু ছিলেন, বাল্যকালে সিরাজকে বড়ই নিদারুণভাবে বেত্রাঘাত করিতেন; সিংহাসনে পদার্পণ করিয়া সিরাজদ্দৌলা তাহার প্রতিশোধ লইবার জন্য সর্বজনসমক্ষে হোসেন কুলীকে হত্যা করেন?[২] বলা বাহুল্য যে, ইহা সর্ব্বৈব স্বকপোল কল্পিত!
লোকে যাহাই বলুক, পাপ চিরদিনই পাপ। হোসেন কুলীকে হত্যা করিয়া, সিরাজদ্দৌলা যে সেই পাপস্মৃতি আমরণ বহন করিয়া- ছিলেন, তাহার পরিচয় যথাস্থানে প্রকাশিত হইবে। যেরূপ ঘটনাচক্রে পতিত হইয়া সিরাজদ্দৌলা এই হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হইয়াছিলেন, সিরাজ-