পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
সিরাজদ্দৌল্লা।

হস্তে জমীদারগণকে শাসন করিয়া, ইংরাজের বাণিজ্যরক্ষার সহায়তা করিতেন। ইহার দুই একটি দৃষ্টান্ত এখনও বর্ত্তমান আছে।

 এখন যেমন কলিকাতা মহানগরী মফঃস্বলবাসী ধনী-সন্তানদিগের সাধারণ প্রমোদশালায় পরিণত হইয়াছে, সেকালে কলিকাতায় এরূপ কোন উৎকট প্রলোভন বর্তমান ছিল না। কেহ বাণিজ্যব্যবসায়ে অর্থোপার্জ্জন করিবার জন্য, কেহ বা বর্গীর হাঙ্গামায় নিরাপদ হইবার সম্ভাবনায় সময়ে সময়ে কলিকাতায় আসিয়া বাস করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। বর্ধমানের মহারাজ তিলকচাঁদ বর্গীর হাঙ্গামায় উপর্য্যুপরি বিপর্যস্ত হইয়া, অবশেষে কলিকাতায় একটি রাজবাটী নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন। অবসর সময়ে সেখানে আসিয়া দুই দশ দিন বাস করিতেন, অধিকাংশ সময় তাহা কর্ম্মচারিগণের রক্ষণাধীনেই পড়িয়া থাকিত। রামজীবন কবিরাজ নামে মহারাজের একজন তহশিলদার, গোপনে গোপনে ইংরাজদিগের সঙ্গে বাণিজ্যব্যাপারে লিপ্ত হইয়া, কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ অর্থোপার্জ্জন করিতেন। যে কারণে হউক, রামজীবন একবার জন উড নামক একজন ইংরাজ-বণিকের নিকট কিছু ঋণগ্রস্ত হইয়া পড়েন। উড সাহেব রামজীবনের নামে কলিকাতার “মেয়রকোর্টে” ৬৩৫৭ টাকার এক ডিক্রী করিয়া রাখিয়াছিলেন।[১] এই টাকার সহিত অবশ্যই বর্দ্ধমানরাজের কোন সংস্রব ছিল না। কিন্তু ইংরাজরণিক যখন সহজে রামজীবনের নিকট হইতে টাকা আদায় করিতে পারিলেন না, তখন ইংরাজ-আদালতের তৎকাল-প্রচলিত অদ্ভুত বিচার-কৌশলে রামজীব-

  1. The Gomasta owed Rupees 6357 to a European; the payment: of which could not be secured."—Revd. Long.