পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
সিরাজদ্দৌল্লা।

ডাক্তার ফোর্থ কিন্তু এ কথা অস্বীকার করিয়া সিরাজদ্দৌলাকেই কলহপ্রিয় চঞ্চল যুবক বলিয়া লোকসমাজে প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করিয়া গিয়াছেন। তিনি বলেন:—

 ‘আমি প্রতিদিন প্রাতঃকালে বৃদ্ধ নবাবকে দেখিয়া আসিতাম। মৃত্যুর একপক্ষ পূর্ব্বে একদিন তাহাকে দেখিতে গিয়াছি, এমন সময়ে সিরাজদ্দৌলা আসিয়া নিবেদন করিলেন যে, তিনি সংবাদ পাইয়াছেন, আমরা নাকি ঘসেটি বেগমের সাহায্য করিতে স্বীকৃত হইয়াছি।

 “বৃদ্ধ নবাব তৎক্ষণাৎ আমার দিকে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন;—‘এ কথা কি সত্য?’

 “আমি বলিলাম,—‘না, ইহা কখনই সত্য নহে। আমাদিগকে অপদস্থ করিবার প্রত্যাশায় আমাদের শত্রুপক্ষ এরূপ জনরবের সৃষ্টি করিয়া থাকিবে। ইংরাজ কোম্পানী বণিক, তাহারা সৈনিক নহে-দেশের রাষ্ট্র বিপ্লবে তাহারা যোগদান করিবে কেন? এই ত প্রায় শতাধিক বৎসর আমরা এ দেশে বাণিজ্য করিয়া আসিতেছি, আমরা ত চিরদিন কেবল বাণিজ্য সইয়াই সন্তুষ্ট রহিয়াছি; আমরা ত কখনই রাষ্ট্রবিপ্লবে কাহারও পক্ষসমর্থন করি নাই?'

 “তখন বৃদ্ধ নবাব জিজ্ঞাসা করিলেন, 'তোমাদের কাশিমবাজারের কুঠী, না কেল্লা?—সেখানে কতজন সৈনিক থাকে?’

 “আমি বলিলাম, 'যাহা নিয়ম, তাহার বেশী থাকে না। কর্মচারী সমেত মোট ৪০ জন মাত্র।’

 ‘কখন কি তাহার বেশী থাকিত না?’