তাহাতে প্রায় প্রতি বৎসরেই সহস্রাধিক ইংরাজ অকালে কালকলে পতিত হইতেন;—অনেকেই কলিকাতার জলবায়ুর প্রকোপ সহ্য করিতে পারিতেন না। ইংরাজদিগের যত্নে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় সংস্থাপিত হইয়াছিল; তাহাতে প্রবেশ করিবার জন্য আগ্রহের অবধি ছিল না;—কিন্তু যাঁহারা প্রাণের দায়ে প্রবেশ করিতেন, তাহারা অনেকেই ফিরিয়া আসিবার অবসর পাইতেন না।[১]
বর্ষাসমাগমে জ্বরবিকারের প্রবল প্রতাপে অনেকেই শয্যাগত হইতেন। যাঁহারা কোনরূপে ভালয় ভালয় বর্ষাকাল কাটাইয়া দিতে পারিতেন, তাহারা প্রতি বৎসরে ১৫ই অক্টোবরের শরৎকৌমুদী-বিধৌত প্রশান্ত নিশীথে প্রীতিভোজনে সম্মিলিত হইয়া পরস্পর পরম সমাদরে প্রগাঢ় হোলিঙ্গন করিয়া আনন্দোচ্ছাস উদ্বেলিত করিতেন।[২]
বর্গীর হাঙ্গামা নিবারণ করিবার জন্য ইংরাজ বাঙ্গালী মিলিত হইয়া নগরক্ষার্থ অগ্রপশ্চাৎ বিচার না করিয়া স্বহস্তে যে “মহারাষ্ট্র খাত” খনন করিয়াছিলেন, তাহার গর্ভোদগত পূতিগন্ধে নাগরিকদিগের নাসারন্ধ্র জ্বলিয়া উঠিত। পথ ঘাটের কিছুমাত্র পারিপাট্য ছিল না; যাহা ছিল, তাহাও কখন ধূলায়, কখন কাদায়, এবং নিরন্তর ন্যক্কারজনক বীভৎস দ্রব্যে পরিপূর্ণ হইয়া থাকিত। সেকালের লাল-