পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/২২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জনসংখ্যা।
২১১

প্রধান কলঙ্ক;—সে কলঙ্ক কি নিতান্ত অতিরঞ্জিত বা সর্ব্বথা কাল্পনিক কলঙ্ক নহে?

 সিরাজদ্দৌলা দুর্গজয় করিবার সময়ে আদৌ ১৪৬ জন লোক বন্দী হওয়াই বিশেষ সন্দেহের কথা! হলওয়েল যেদিন দুর্গরক্ষার ভারগ্রহণ করেন, সেদিন দুৰ্গমধ্যে কেবল ১৭০ জন বর্ত্তমান ছিল; আর আর সকলেই দুর্গাধিপতি মহামতি ড্রেক সাহেবের অসাধুদৃষ্টান্ত অনুসরণ করিয়া প্রাণ লইয়া পলায়ন করিয়াছিল। এই ১৭০ জন লোকের মধ্যে দুই দিবসের অক্লান্ত রণতরঙ্গে অনেকেই জীবনবিসর্জ্জন করে; যাহারা জীবিত ছিল, তন্মধ্যে আহত ও মুমূর্ষর সংখ্যাও অল্প ছিল না। যে সকল লোক কোনরূপে পলায়ন করিতে পারে নাই, তাহারাই আত্মসমর্পণ করিয়াছিল; তদ্ভিন্ন যাহাদের শক্তি ছিল, সাহস ছিল, পলায়নের প্রবৃত্তি ছিল, তাহারা অনেকেই দুর্গজয়ের কোলাহলের অবসর পাইয়া প্রাণ লইয়া পলায়ন করিয়াছিল। যে সকল নরনারী মিরজা আমীরবেগের হস্তে পতিত হয়, মীরজাফরের কৃপায় তাহারা সেই দিনই নিরাপদে পলতায় প্রেরিত হইয়াছিল।[১] এরূপ অবস্থায় হলওয়েলের কথিত ১৪৬ জন বন্দী কারারুদ্ধ হওয়া বিশেষ সন্দেহস্থল। হলওয়েল স্বপ্রণীত পুস্তকে[২] যে সকল মৃত ও মৃতকল্প সহযোগীদিগের নামোল্লেখ করিয়া গিয়াছেন, তাহাতেও ৬৬ জনের অধিক নাম প্রাপ্ত হওয়া যায় না। হলওয়েলের স্বরচিত পুস্তকে দেখিতে পাওয়া যায় যে, সিরাজদ্দৌলা কলিকাতা আক্রমণের কয়েকদিন পূর্ব্বে কলিকাতাদুর্গবাসী ইংরাজদিগের যে জনসংখ্যা গৃহীত হইয়াছিল, তাহাতে সর্ব্বসাকল্যে ১৯০

  1. Mutakherin
  2. India Tracts.