নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন; দিল্লীর নাম-সর্ব্বস্ব বাদশাহের “ফরমাণ” দেখাইয়া জলে স্থলে বিনাশুল্কে বাণিজ্য করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন, এবং আরও ৩৮ খানি গ্রাম ক্রয় করিবার ক্ষমতা-পত্র আনাইয়াছিলেন।[১] নবাব জমাদারদিগকে শাসন করিয়া দিলেন, কেহ ইংরাজের নিকট সুচ্যগ্র ভূমিও বিক্রয় করিতে সাহস পাইলেন না;[২] অগত্যা ইংরাজ বণিক দেশে দেশে বাণিজ্য করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন।
দিল্লীর বাদশাহের বাহুবল ক্রমেই টুটিয়া আসিতেছিল। অযোধ্যায় এবং দাক্ষিণাত্যে স্বাধীন মুসলমান-রাজ্য গঠিত হইতেছিল। শিবাজীর পদানুসরণ করিয়া মহারাষ্ট্র-সেনা হিন্দুসাম্রাজ্য বিস্তৃত করিতেছিল; দেখাদেখি বাঙ্গালার নবাবেরাও বাদশাহকে রাজকর প্রদানের আবশ্যকতা অস্বীকার করিতেছিলেন। বাঙ্গালাদেশ প্রকৃত প্রস্তাবে স্বাধীন,— কেবল কাগজপত্রে দিল্লীর অধীন বলিয়া পরিচিত হইতেছিল।
এই সময়ে সরফরাজ খাঁ বাঙ্গালার নবাব। তিনি অল্পদিনের মধ্যেই লোকের বিরাগভাজন হইয়া উঠিলেন। ইন্দ্রিয়ালালসাই তাঁহর কাল হইল! তিনি মোহান্ধ হইয়া একদিন জগৎশেঠের পুত্রবধূকে ধরিয়া আনিলেন; দেশের লোকে একেবারে শিহরিয়া উঠিল[৩]! রাজা ও জমীদারবর্গ সকলে মিলিয়া সরফরাজকে সমুচিত শিক্ষা দিবার জন্য মন্ত্রণা করিতে লাগিলেন।
সেকালের জমীদারদিগের ক্ষমতা ছিল, পদগৌরব ছিল, দিল্লীর দরবারে পরিচয় ছিল। তাঁহারা দশজনে মিলিয়া বাদশাহকে ধরিয়া