বন্দীতে কিন্তু সে কথার উল্লেখ নাই। জবানবন্দী পড়িয়া বরং ইহাই মনে হয় যে, অধিকাংশ লোকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে কেবল তিনিই কোম্পানীর কল্যাণের জন্য যুদ্ধের সপক্ষে দাঁড়াইয়াছিলেন। এখানেও কি তাঁহার স্মৃতিশক্তি সহসা শিথিল হইয়া পড়িয়াছিল? মেকলে বলেন যে, ‘অহিফেণ-প্রসাদে তন্দ্রামগ্ন থাকিয়া ক্লাইব মধ্যে মধ্যে চমকিয়া উঠিতেন![১] তাঁহার এই সকল স্থূলেভুলগুলি কি অহিফেণ প্রসাদাৎ,—না স্মৃতিভ্রংশবশাৎ,—সে কথার আর এখন মীমাংসা করিবার উপায় নাই!
কিজন্য সমগ্র সমর-সভার যন্ত্রণা উপেক্ষা করিয়া সহসা ক্লাইবের শৌর্য্যবীর্য্য পুনরাগত হইয়াছিল, সে বিষয়েও নানারূপ মতভেদ দেখিতে পাওয়া যায়! অর্ম্মি বলেন যে, ‘সভাভঙ্গ হইবামাত্র নিকটস্থ বনান্তরালে প্রবেশ করিয়া একঘণ্টাকাল গভীর ধ্যানে নিমগ্ন থাকিয়া ক্লাইব নিজেই বুঝিয়াছিলেন যে অগ্রসর না হওয়াই মূর্খতা! তিনি সেইজন্য শিবিরে আসিয়াই আদেশ দিলেন যে, প্রত্যুষেই গঙ্গাপার হইতে হইবে।”[২]
ষ্টুয়ার্ট এবং মেকলে অর্ম্মির পদানুসরণ করিয়া এই কথাই লিখিয়া গিয়াছেন। এই বর্ণনায় যাহা কিছু অসঙ্গতি ছিল তাহার পাদপূরণ করিয়া বাঙ্গালী কবি ধ্যানস্তিমিতলোচন ইংরাজ সেনাপতির সম্মুখে ইংলণ্ডের সৌভাগ্য লক্ষ্মীকে সশরীরে হাজির করিয়া দিয়াছেন![৩]