তাহার পর কি হইল? মুর্শিদাবাদের নরনারী এই রাজহত্যার আকস্মিক সংবাদে হাহাকার করিয়া উঠিল; তাহাদিগের আকুল আর্তনাদ মুসলমানের উচ্চ অবরোধবেষ্টিত বেগমমহলে প্রবিষ্ট হইয়া সিরাজ-জননী আমিনাবেগমের কর্ণগোচর হইল! বিদ্রোহী দল তখন বিজয়োৎসবে উন্মত্ত হইয়া সিরাজের ক্ষতবিক্ষত শবদেহ হস্তিপৃষ্ঠে সংস্থাপন করিয়া, নগর প্রদক্ষিণে বাহির হইয়া- ছিল। রাজপথ লোকে লোকারণ্য হইয়া গেল; সিরাজ-জননী হাহাকার করিতে করিতে লজ্জাভয়বিসর্জন দিয়া রাজপথে আসিয়া ধূলিবিলুষ্ঠিত হইয়া পড়িলেন; তাহাকে দেখিয়া শববাহক হস্তী সহসা রাজপথে বসিয়া পড়িল; —স্নেহময়ী জননী সন্তানের মাংসপিণ্ড বুকে ধরিয়া মুচ্ছাপন্ন হইয়া পড়িলেন। মীরজাফরের অনুচর কদম হোসেন তখন নানারূপ তাড়না করিয়া সিরাজ- জননী আমিনা বেগমকে পুনরায় অন্তঃপুরে কারারুদ্ধ করিয়া, সিরাজের শবদেহ সমাধিনিহিত করিবার জন্য ভাগীরথীর পশ্চিমতীরবর্তী আলিবর্দীর সমাধিমন্দিরে উপনীত করিল।[১] এই ঐতিহাসিক সমাধিমন্দিরে আলিবর্দী
- ↑ The populace beheld the procession with awe and consterna. tion, and the soldiery, having no longer the option of two lords, accepted the promises of Jaffier, and refrained from tumult.- Ormed ii, 184.
তাহার প্রতি অধিকতর সহানুভূতি প্রকাশ করতে পারিতেন। ষ্টার্ট সিরাজের অন্তিম উক্তি লইয়াও পরিহাসচ্ছলে লিখিয়া গিয়াছেন-“This is, perhaps, a solitary instance of a native of Hindoostan expressing a consiousness of guilt on his death-bed. Being absolute predestinarians they lay the fault to fate; and, after a life spent in every species of atrocity, pass their last moments in tranquility.” —Stewart.