পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঢ়ের যুদ্ধ।
৪১

 এইখানে আসিয়া এক গুপ্তচর ধরা পড়িল। তাহার বস্ত্রাভ্যন্তরে একখানি পত্র বাহির হইল। সেই পত্রে বিশ্বাসঘাতক আতাউল্লা আফগানদিগকে মনের কথা খুলিয়া লিখিয়াছেন! সুযোগ পাইলে তিনিও যে বিদ্রোহিদলে যোগদান করিবেন, তাহার প্রস্তাব করিয়াছেন। সিরাজদ্দৌলা এই বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় পাইয়া একেবারে ক্রোধোন্মত্ত হইয়া উঠিলেন। বহুদর্শী বৃদ্ধ নাবাব আশু তাহার কোনরূপ প্রতিকার না করিয়া, কন্যার বন্ধনমোচন করিবার জন্যই অগ্রসর হইতে লাগিলেন। দ্বারভাঙ্গা প্রদেশের যে সকল হিন্দু জমীদার আফগানদিগের অত্যাচারে জর্জ্জরিত হইতেছিলেন, তাঁহারা মুঙ্গেরে আসিয়া আলিবর্দ্দীর সঙ্গে মিলিত হইলেন। তাঁহাদের মুখে আলিবর্দ্দী সংবাদ পাইলেন যে, বিদ্রোহীদল পাটনা ছাড়িয়া বাঢ় নামক স্থানে শিবির-সন্নিবেশ করিয়াছে।

 আলিবর্দ্দী বাঢ়ের বিস্তৃত ক্ষেত্রে শত্রুসেনার সম্মুখীন হইলেন। তানোজির আজ্ঞাধীন মহারষ্ট্রীয় সৈন্যদল ইতিপূর্ব্বে সেখানে উপস্থিত হইয়াছিল। তাহারা প্রকাশ্যে আফগানদিগের সহায়তা করিতে সম্মত হইয়া, গোপনে গোপনে উভয় দলেরই শিবির লুণ্ঠন করিবার সংকল্প করিয়াছিল। আলিবর্দ্দী কালক্ষয় না করিয়া আফগান শিবির আক্রমণ করিলেন।

 যুদ্ধের প্রথম উপক্রমেই সরদার খাঁ নিহত হইলেন। তাঁহার ছত্রভঙ্গ সৈন্যদল প্রাণভয়ে চারিদিকে পলায়ন করিতেছে। তাহাদিগকে আবার সমরক্ষেত্রে সমবেত করিবার জন্য সমসের খাঁ সসৈন্যে অগ্রসর হইয়েছেন। আলিবর্দ্দী উভয় সেনাদলকে বামে দক্ষিণে যুগপৎ আক্রমণ করিয়া বীরদর্পে ছুটিয়া চলিয়াছেন, চারিদিকে বিচ্ছিন্ন ভাবে খণ্ড যুদ্ধ