পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
সিরাজদ্দৌলা।

খানি জাহাজ লুট করিয়া লইয়াছ। আণ্টনি নামক একজন মহাজন বহুলক্ষ টাকার পণ্যদ্রব্যের সঙ্গে আমার জন্য কতকগুলি মূল্যবান উপঢৌকন দ্রব্য আনয়ন করিতেছিলেন; শুনিলাম যে, সে জাহাজখানিও তোমরা লুটিয়া লইয়াছ। এই সকল মহাজনগণ রাজ্যের কল্যাণসাধন করিতেছেন, আমি তাঁহাদের অভিযোগ আর উপেক্ষা করিতে পারি না। আমি তোমাদিগকে বাণিজ্য করিতেই অধিকার দিয়াছি, দস্যুতা করিতে ক্ষমতা প্রদান করি নাই। এই রাজাদেশ পাইবামাত্র তোমরা যদি সহজে এই সকল ক্ষতিপূরণ না কর, তবে আমি বিশেষ কঠিন দণ্ডাজ্ঞা প্রদান করিব।”[১]

 পত্র পাইয়া কলিকাতার ইংরাজগণ অনেক গুপ্ত মন্ত্রণা করিয়া প্রতিবাদপত্র পাঠাইলেন, অপরাধ অস্বীকার করিলেন; এবং অভিযোগকারী মহাজনদিগকে ধরপাকড় করিয়া মুক্তিপত্র লেখাইয়া লইবার জন্য নানারূপ চেষ্টা করিতে লাগিলেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হইল না। কালবিলম্ব দেখিয়া নবাব ইংরাজবাণিজ্য বন্ধ করিয়া দিলেন; ইংরাজগণ অনন্যোপায় হইয়া জগৎশেঠের শরণাপন্ন হইলেন। ইহাতে সিরাজদ্দৌলা বড় আনন্দলাভ করিলেন। এতদিনের পর ইংরাজ তাড়াইবার সুযোগ উপস্থিত দেখিরা মাতামহকে উৎসাহিত করিতে লাগিলেন। কিন্তু জগৎশেঠের কৃপায় ইংরাজ বণিক সে যাত্রা রক্ষা পাইলেন; অনেক

  1. Long's Selections from the Records of the Government of India, Vol. I. অর্থদণ্ডের পরিমাণ ১২ লক্ষই মুদ্রিত আছে, কিন্তু শ্রীযুক্ত কালীপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় বলেন উহা ভ্রম মাত্র, এক লক্ষ বিশ হাজার হইবে।