পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
সিরাজদ্দৌলা

আদ্‌মির” স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করিয়া সিরাজদ্দৌলা শ্বেতকায় বিদেশীয় বণিকের চক্ষুশূল হইয়া উঠিলেন; ইহার জন্যও ইতিহাস-লেখকদিগের হাতে তাঁহাকে কত না লাঞ্ছনা ভোগ করিতে হইয়াছে।

 রাজকার্য্য পরিদর্শন উপলক্ষে ইংরাজদিগের বাণিজ্য-কৌশল এবং ছল প্রতারণা ধরিতে পারিলেই সিরাজদ্দৌলা তাঁহাদের লাঞ্ছনার একশেষ করিতে আরম্ভ করিলেন। মেরিনামক একখানি জাহাজ এইরূপে বড়ই বিড়ম্বিত হয়। হলওয়েল সাহেব তাহাতে মর্ম্মপীড়িত হইয়া ইংরাজদরবারে অভিযোগ করেন,—মেরি যে কোম্পানীর জাহাজ না হইয়াও বিনাশুল্কে বাণিজ্য করিবার পরোয়ানা লইয়াছিল,এবং এইরূপে বিনাশুল্কে ইংরাজ মাত্রকেই বাণিজ্য করিয়া অর্থোপার্জ্জনের অবসর না দিলে তাহাদের দুর্দ্দশার সীমা থাকিবে না, ইহাই হলওয়েলের অভিযোগ।[১] সুতরাং ইংরাজমাত্রেই সিরাজদ্দৌলার শত্রু হইয়া উঠিতে লাগিলেন।

 ক্রমে এই সকল কথা বিলাতের কর্ত্তৃপক্ষীয়দিগের কর্ণগোচর হইল। তাঁহারা পূর্ব্বরীতির অনুসরণে নবাবের তুষ্টিসম্পাদনের জন্য আরও কিছু অর্থব্যয় করিয়া কলহ বিবাদ নিবারণ করিবার পরামর্শ দিতে লাগিলেন।

 কলিকাতার ইংরাজগণ অগত্যা আরও কিছু উপহার উপঢৌকন লইয়া সিরাজদ্দৌলার নিকট হাজির হইলেন। কিন্তু তাহাতেও উভয়ের মনোমালিন্য দূর হইল না। কেবল প্রকাশ্য উৎপীড়ন কিছু দিনের জন্য রহিত হইল মাত্র। ইংরাজ দরবার তদুপলক্ষে সিরাজকে ঘোটক উপঢৌকন দিবার মন্তব্য অবধারণ করিলেন।[২]

  1. পরিশিষ্ট ইংরাজী অভিযোগপত্র দ্রষ্টব্য।
  2. পরিশিষ্ট মন্তব্যলিপি দ্রষ্টব্য।