পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোহনলাল।
৬৯

বেশন করিত। দেখিয়া শুনিয়া সহিয়া গিয়াছিল; সুতরাং বাদশাহ বা নবাবদিগের গুপ্ত চরিত্র লইয়া কেহ কোনরূপ আন্দোলন করিত না।

 আমরা সিরাজদ্দৌলার ইন্দ্রিয়বিকারের গুণানুবাদ করিতেছি না, তাঁহার পাপ-লিপ্সারও সমর্থন করিতেছি না;—আমরা কেবল সমসাময়িক ইতিহাস লইয়া তাহার আলোচনা করিতেছি। সেই ইতিহাসে যে সকল আনুষঙ্গিক প্রমাণ এখনো বর্ত্তমান আছে, তাহার দুই একটি আলোচনা করিলেই প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ হইয়া পড়িবে।

 মহারাজ মোহনকালের নাম অনেকের নিকটেই সুপরিচিত। বাঙ্গালী কবি[১] তাঁহার বীরত্ব বর্ণনা করিতে গিয়া যে সকল কবিতা রচনা করিয়াছেন, তাহাও অনেকের নিকট সমাদর লাভ করিয়াছে। কিন্তু মোহনলাল হিন্দু হইয়াও কি উদ্দেশ্যে সিরাজদ্দৌলার সিংহাসন ও জীবন রক্ষার জন্য প্রাণবিসর্জ্জন করিয়াছিলেন, কবি তাহার মূলতত্ত্ব আলোচনা করেন নাই।

 মোহনলাল একজন সামান্য অবস্থার লোক। নবাব-সরকারে তাঁহার কোনই পদ-গৌরব ছিল না। সিরাজদ্দৌলা যখন যৌবনোন্মাদে মত্ত, সেই সময়ে যে সকল লোক দলে দলে তাঁহার পার্শ্বচর হইয়াছিলেন, মোহনলাল তাহাদিগেরই একজন। মোহনলালের একটি সর্বাঙ্গসুন্দরী ভগিনী ছিলেন। রূপে তিনি বঙ্গসুন্দরীদিগের মধ্যে সমধিক রূপবতী বলিয়া পরিচিত। যৌবনোদ্গমে সেই অতুল রূপরাশি ক্রমেই বিকশিত হইয়া উঠিতে লাগিল। এই রূপসী ক্ষীণাঙ্গীদিগের মধ্যেও ক্ষীণাঙ্গী রলিয়া পরিচিত ছিলেন। ইঁহার দেহভার ৩২ সেরের অধিক ছিল

  1. নবীনচন্দ্র সেন।