পাতা:সীতারাম- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
সীতারাম

মধ্যে প্রবেশ করিলেই শোভা পায়। তবে কি না, যে ত্রিশূলের দাগ দেখিতেছি, এ ধরা পড়া বড় বিচিত্র নহে। ও সব মতিগতি আমার মত দুঃখী প্রাণীর ভাল না—যার ধন তার কাছে পৌঁছাইয়া দেওয়াই ভাল।” এইরূপ বিবেচনা করিয়া জীবন ভাণ্ডারী লোভ সম্বরণ পূর্ব্বক যেখানে প্রভু গদির উপর বসিয়া আলবোলায় সুগন্ধি তামাকু টানিতেছিলেন, সেইখানে মোহর পৌঁছাইয়া দিল। এবং সবিশেষ বৃত্তান্ত নিবেদিত হইল।

 জীবন ভাণ্ডারীর মুনিব অভি সুপুরুষ। ত্রিশ বৎসরের যুবা, অতি বলিষ্ঠ গঠন, রূপে কার্ত্তিকেয়। তিনি মোহরটি লইয়া দুই চারি বার আলোতে ধরিয়া ভাল করিয়া নিরীক্ষণ করিলেন। শেষে দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া বলিলেন, “দুর্গে! এ কি এ!”

 ভাণ্ডারী বলিল, “কি বলিব?”

 প্রভু বলিলেন, “যে তোকে মোহর দিয়েছে, তাকে এইখানে ডেকে নিয়ে আয়। সঙ্গে কেহ আছে?”

 ভাণ্ডারী মহাশয় তরকারীর কথাটা একেবারে গোপন করিবার মানসে বলিলেন, “এক জন মেছুনি আছে।”

 প্রভু। সে যেন আসে না, তুইও পৌঁছাইয়া দিয়াই চলিয়া যাইবি।

 শুনিয়া ভাণ্ডারী বেগে প্রস্থান করিল। এবং অচিরাৎ শ্রীকে পৌঁছাইয়া দিয়া চলিয়া গেল।

 পৃ. ৯, পংক্তি ১৯-২২, “তুমি কে?...সীতারাম রায়।” এই অংশের পরিবর্ত্তে ছিল—

 আমি সীতারাম রায়—তুমি কে? তোমার মুখে ঘোম্টা—কথা কহিতেছ না, আমি চিনিব কি প্রকারে?

 পৃ. ৯, পংক্তি ২৪, “এত সুন্দরী!” কথা দুইটি ছিল না।

 পংক্তি ২৫-২৬, “শ্রী বলিল...লাগিল।” এই কথাগুলির পরিবর্ত্তে ছিল— গুনিয়া শ্রী কাঁদিয়া উঠিল।

 পৃ. ১১, পংক্তি ৩-৪, “একবার আবার...অন্য কথা।” এই কথাগুলি ছিল না।

 পংক্তি ৬, এই “তৃতীয়” পরিচ্ছেদটি প্রথম সংস্করণের “চতুর্থ” পরিচ্ছেদ। এই পরিচ্ছেদের পূর্ব্বে প্রথম সংস্করণে আর একটি পরিচ্ছেদ ছিল। নিম্নে তাহা মুদ্রিত হইল।—

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

দণ্ড চারি ছয় পরে, সীতারাম দ্বার খুলিয়া, জীবন ভাণ্ডারীকে ডাকিয়া বলিলেন, “মৃণ্ময়কে ভাকিয়া আন”