পাতা:সীতারাম- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা সীতারামের বিজ্ঞাপনে বঙ্কিমচন্দ্র সীতারামকে ঐতিহাসিক ব্যক্তি স্বীকার করিয়াও র্তাহার উপন্যাসের সীতারামের অনৈতিহাসিকতা মানিয়া লইয়াছেন ; কারণ, তিনি স্পষ্টই বলিয়াছেন, গ্রন্থের উদ্দেশ্য অন্য। প্রারম্ভে উদ্ধৃত ক্রমন্থগবদগীতার শ্লোক কয়টির মধ্যে সেই উদ্দেশ্যের আভাস আছে। এতৎসত্ত্বেও ইতিহাসবিষয়ে কৌতুহলী পাঠকের উপর তিনি “Westland সাহেবের কৃত যশোহরের বৃত্তান্ত এবং Stewart সাহেবের কৃত বাঙ্গালার ইতিহাস পাঠ”-এর বরাদ্দ করিয়াছেন। কিন্তু তাহাতেই ইতিহাসের ছাত্রের বিশেষ সুবিধা হইবে বলিয়া মনে হয় না, দুইটি বৃত্তান্ত পরস্পরবিরোধী। ঐতিহাসিক সীতারামকে লইয়া সৰ্ব্বপ্রথম বিস্তৃত আলোচনা করিয়াছেন—ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয়, ১৩০২ বঙ্গাব্দের সাহিত্য’ পত্রিকার কাৰ্ত্তিক হইতে চৈত্র পর্য্যস্ত ছয় সংখ্যায়। ঐতিহাসিক সীতারামের বীরত্ব ও শৌর্য্যের কথা স্মরণ করিয়া মৈত্রেয় মহাশয় বঙ্কিম-বর্ণিত । সীতারামের অপদার্থতায় অত্যন্ত পীড়া বোধ করিয়াছেন। ১৩২৩ সালের জ্যৈষ্ঠ মাসের সাহিত্যে শ্ৰীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ “সীতারাম-প্রসঙ্গ” লেখেন। ১৩৩১ সালের আষাঢ়শ্রাবণ সংখ্যা মানসীতে র্তাহার “বঙ্কিমচন্দ্র ও বাঙ্গালার ইতিহাস” প্রবন্ধেও কিছু আলোচনা আছে। ১৩২৭ সালে প্রকাশিত খ্ৰীযুক্ত অক্ষয়কুমার দত্তগুপ্ত কবিরত্ন মহাশয়ের বঙ্কিমচন্দ্র পুস্তকের চতুর্দশ পরিচ্ছেদে সীতারামের ঐতিহাসিকতা আলোচিত হইয়াছে। ১৩৩, সালের 'মানসী ও মৰ্ম্মবাণী’ পত্রিকার মাঘ ও ফাঙ্কন সংখ্যায় রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, অযোধ্যানাথ বিদ্যাবিনোদ ও কাজী মোহাম্মদ বক্স সীতারামের ঐতিহাসিকত্ব বিচার *foston W. W. Hunter-zúč A Statistical Account of Bengal of ৭ম খণ্ডেও কিছু বিবরণী আছে। অনুসন্ধিৎসু পাঠক এগুলি হইতে সীতারামের ঐতিহাসিক পরিচয় সংগ্ৰহ করিবেন। আনন্দমঠ ও 'দেবী চৌধুরাণী’র ভূমিকায় আমরা দেখাইয়াছি যে, শেষ জীবনে, অর্থাৎ ১৮৮০ খ্ৰীষ্টাব্দের পর হইতেই কতকগুলি কারণে ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্রের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে, শুধু উপন্যাস রচনার খেয়ালেই উপন্যাস রচনা হইতে তিনি বিরত হন। এই কালে অনুশীলনতত্ত্ব’ লইয়। তিনি বিশেষভাবে আলোচনা করিতেছিলেন এবং এই