পাতা:সেঁজুতি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সেঁজুতি

ছাড়ায়ে তোমার অধিকার। আমার সে ভালবাসা
সব ক্ষয়ক্ষতিশেষে অবশিষ্ট র’বে; তার ভাষা
হয়তো হারাবে দীপ্তি অভ্যাসের ম্লান’স্পর্শ লেগে
তবু সে অমৃতরূপ সঙ্গে র’বে যদি উঠি জেগে
মৃত্যু-পরপারে। তারি অঙ্গে এঁকেছিল পত্রলিখা
আম্রমুঞ্জরীর রেণু, এঁকেছে পেলব শেফালিকা
সুগন্ধি শিশির কণিকায়; তারি সূক্ষ্ম উত্তরীতে
গেঁথেছিল শিল্পকারু,প্রভাতের দোয়েলের গীতে
চকিত কাকলী সূত্রে; প্রিয়ার বিহ্বল স্পর্শখানি
সৃষ্টি করিয়াছে তার সর্ব দেহে রোমাঞ্চিত বাণী,
নিত্য তাহা রয়েছে সঞ্চিত। যেথা তব কর্মশালা
সেথা বাতায়ন হতে কে জানি পরায়ে দিত মালা
আমার ললাট ঘেরি সহসা ক্ষণিক অবকাশে,
সে নহে ভৃত্যের পুরস্কার; কী ইঙ্গিতে কী আভাসে
মুহূর্তে জানায়ে চলে যেত অসীমের আত্মীয়তা
অধরা অদেখা দূত, ব’লে যেত ভাষাতীত কথা
অপ্রয়োজনের মানুষেরে।




সে মানুষ, হে ধরণী,
তোমার আশ্রয় ছেড়ে যাবে যবে, নিয়ো তুমি গনি’