আমি বললুম, রাগ কোরো না পাণ্ডাজি। মন্দিরে পুজো দিতে যাব, রাস্তা খুঁজে পাচ্চিনে।
সে বললে, তোমরা বুঝি মেঘের দিকে হাঁ-ক'রে-তাকানো রাস্তা-খোঁজার দল। চলো পথ দেখিয়ে দিচ্চি।
আমাকে হিড়্ হিড়্ ক'রে টেনে নিয়ে এল বিশকর্ম্মা ঠাকুরের মন্দিরে। হাঁ না করবার সময় দিলে না। কিছু জিগেস করবার আগেই বললে, রাখো এইখানে থালা, পকেট থেকে বের করো পাঁচসিকে দক্ষিণে।
বোকার মতো পুজো দিলেম। তখনি হিসেব সে টুকে নিলে তার নোট বইয়ে। কব্জিঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললে, হয়েছে কাজ, এখন বেরোও। সময় নেই।
পরদিন থেকেই দেখি ফল ফলেছে। ভোর তখন সাড়ে চারটে। ডাকাত পড়েছে ভেবে ধড়ফড় ক'রে ঘুম ভেঙে শুনি, অনাথ-তারিণী সভার সভ্যেরা বারো তেরো বছরের পঁচিশটা ছেলে জুটিয়ে দরজায় এসে চীৎকারস্বরে গান জুড়ে দিয়েছে,—
যত পেটে ধরে, তার চেয়ে ভরো পেটে,
টাকাপয়সায় পকেট পড়ছে ফেটে,
হিসেব খতিয়ে দেখলে বুঝতে পারো,
অনাথজনের কত ধার তুমি ধারো।
তারো, গরীবেরে তারো,
তারো, তারো, তারো।
তারো তারো-করতে করতে ভীষণ চাঁটি পড়তে লাগল খোলে। মনে মনে যত খতিয়ে দেখছি তহবিলে কত টাকা বাকি, চাঁটি ততই কানে তালা ধরিয়ে দিলে। সঙ্গে সঙ্গে বাজল কাঁসর, তারো তারো তারো-ক'রে নাচ জুড়ে দিলে ছেলেগুলো। অসহ্য হয়ে এল। দেরাজ খুলে থলিটা বের করলেম। সাতদিনের না-কামানো দাড়িওয়ালা ওদের সর্দ্দার উৎসাহিত হয়ে
৮৪