পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 দাদামশায়, থামলে কেন।

 দিদিমণি, জগতের সব কিছুর সব শেষে আছে থামা।

 না, এ কিন্তু এখনো থামেনি। কলা ছিনিয়ে খাওয়া ও-তো যে-সে পারে।

 আচ্ছা, কাল হবে, আজ কাজ আছে।

 কাল কী হবে বলো না অল্প একটুখানি।

 জানো তে ওর বিয়ের সম্বন্ধ আগেই হয়েছে। ওর যে মগজ বদল হয়ে গেছে সে খবরটা কনের বাড়িতে পৌঁছয় নি। দিন স্থির, লগ্ন স্থির। বরের পিসে ওকে মস্ত দু’ছড়া কলা খাইয়ে ঠাণ্ডা করে বিয়ের জায়গায় নিয়ে গেছেন। তার পরে বিয়ে বাড়িতে যে কাণ্ডটা হোলো তা ভালো করে ফলিয়ে বললে তখন তুমিই বলবে গল্পের মতো গল্প হয়েছে। এর পরে আর ওকে মেরে ফেলবার দরকার হবে না। সে মরার বাড় হবে।

 * * * * 

 সন্ধ্যেবেলায় বসেছি ছাদে। দিব্যি দক্ষিণের হাওয়া দিচ্ছে। শুক্লা চতুর্থীর চাঁদ উঠেছে আকাশে। পুপুদিদি একটি আকন্দের মালা গেঁথে এনেছে কঁচপাত্রে—গল্প বলা শেষ হলে বকশিষ মিলবে।

 হেনকালে হাঁপাতে হাঁপাতে সে উপস্থিত। বললে, আজ থেকে আমার গল্প জোগানের কাজে আমি ইস্তফা দিলুম। আমাকে পাতু গেঁজেলের গা পরিয়েছিলে, সেও সহ্য করেছি, শেষকালে বাঁদরের মগজ পূরেছ আমার খুলির মধ্যে, এ সইবে না। এর পরে হয়তো আমাকে চামচিকে কি টিকটিকি কি গুবরে পোকা বানিয়ে দেবে। তোমাদের অসাধ্য কিছুই নেই। আজ আপিসে গিয়ে কেদারা টেনে বসেছি দেখি ডেস্কের উপরে এক ছড়া মর্ত্তমান কলা। সহজ অবস্থায় কলা আমি ভালোই বাসি—কিন্তু এখন থেকে আমাকে কলা খাওয়া ছেড়েই দিতে হবে। পুপুদিদি, এর পরে তোমার ঐ দাদামশায়

৮৮