পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

ঘণ্টাকর্ণ চলেছেন ঘোর অন্ধকারের ভিতর দিয়ে। বারোটা বাজালেন যখন, তখন আর থাকতে পারলুম না। তাড়াতাড়ি বই ফেলে দিয়ে চমকে উঠে দৌড় দিলুম বিছানায়, বালিশের মধ্যে মুখ গুঁজে চোখ বুজে রইলুম পড়ে।

 খরগোষের সঙ্গে ঘণ্টাকর্ণের ভাব আছে।

 খুব ভাব। খরগোষটা তারই আওয়াজের দিকে কান পেতে চলতে থাকে সপ্তর্ষিপাড়ার ছায়াপথ দিয়ে।

 তার পরে।

 তার পরে যখন একটা বাজে, দুটো বাজে, তিনটে বাজে, চারটে বাজে, পাঁচটা বাজে তখন রাস্তা শেষ হয়ে যায়।

 তারপরে।

 তারপরে পেঁছিয় তন্দ্রা-তেপান্তরের ওপারে আলোর দেশে। আর দেখা যায় না।

 আমি কি পৌঁচেছি সেই দেশে।

 নিশ্চয় পৌঁচেছ।

 এখন তাহলে আমি খরগোষের পিঠে নেই।

 থাকলে যে তার পিঠ ভেঙে যেত।

 ওঃ, ভুলে গেছি, এখন যে আমি ভারি হয়েছি। তার পরে।

 তারপরে তোমাকে উদ্ধার করা চাই তো।

 নিশ্চয় চাই। কেমন ক’রে করবে।

 সেই কথাটাই তো ভাবছি। রাজপুত্তরের শরণ নিতে হোলো দেখছি।

 কোথায় পাবে।

 ঐ যে তোমাদের সুকুমার।

 শুনে এক মুহূর্ত্তে তোমার মুখ গম্ভীর হয়ে উঠল। একটু কঠিন সুরেই

১৩
৯৭