পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বললে, তুমি তাকে খুব ভালোবাসো। তোমার কাছে সে পড়া ব’লে নিতে আসে। তাই তো সে আমাকে অঙ্কে এগিয়ে যায়।

 [এগিয়ে যাবার অন্য স্বাভাবিক কারণও আছে। সে কথাটার আলোচনা করলুম না।] বললুম, তা তাকে ভালোবাসি আব না বাসি সেই আছে এক রাজপুত্তুর।

 কেমন ক’রে জানলে।

 আমার সঙ্গে বোঝাপড়া ক’বে তবে সে ঐ পদটা পাকা ক’বে নিয়েছে।

 তুমি বেশ একটু ভুরু কুঁচকে বললে, তোমারি সঙ্গে ওর যত বোঝাপড়া।

 কী করি বলো, কোনোমতে ও মানতে চায় না ওর চেয়ে আমি বয়সে খুব বেশি বড়ো।

 ওকে তুমি বলো রাজপুত্তব। ওকে আমি জটায়ুপাখী ব’লেও মনে করিনে। ভারি তো।

 একটু শান্ত হও। এখন ঘোব বিপদে পড়া গেছে; তুমি কোথায় তার তো ঠিকানাই নেই। তা এবারকাব মতো কাজ উদ্ধার ক’রে দিক্‌,—আমরা নিশ্বেস ফেলে বাঁচি। এর পরে ওকে সেতুবন্ধনের কাঠবিড়ালি বানিয়ে দেব।

 উদ্ধার করতে ও রাজি হবে কেন। ওর এক্‌জামিনের পড়া আছে।

 রাজি হবার বারো আন। আশা আছে। এই পশু শনিবারে ওদের ওখানে গিয়েছিলুম। বেলা তিনটে। সেই রোদ্দুরে মাকে ফাঁকি দিয়ে ও দেখি ঘুরে বেড়াচ্চে বাড়ির ছাদে। আমি বললুম, ব্যাপার কী।

 ঝাঁকানি দিয়ে মাথাটা উপরে তুলে বললে, আমি রাজপুত্তর।

 তলোয়ার কোথায়।

 দেয়ালির রাত্রে ওদের ছাদে অধিপোড়া তুবড়িবাজির একটা কাঠি পড়েছিল। কোমরে সেইটেকে ফিতে দিয়ে বেঁধেছে-আমাকে দেখিয়ে দিলে।

৯৯