পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

থেকে আলো পড়ছিল ঠিক্‌রিয়ে। কণ্ঠ থেকে উঠছিল অনিন্দ্যসুন্দর সুরে সুমধুর সামগান, ত্রিভুবনের শরীর রোমাঞ্চিত। হঠাৎ দুড়দাড় ক’রে এসে পড়ল বিশ্রীবিরূপের বেসুরী দল—শুচিসুন্দরের সৌকুমার্য মুহূর্ত্তে লণ্ডভণ্ড। কুশ্রীর কাছে সুশ্রীর হার, বেসুরের কাছে সুরের—পুরাণে এ কথা কীর্ত্তিত হয়েছে কী আনন্দে, কী অট্টহাস্যে, অন্নদামঙ্গলের পাতা ওলটালেই তা টের পাবে। এই তো দেখছ বেসুরের শাস্ত্রসম্মত ট্র্যাডিশন্। ঐ যে তুন্দিলতনু গজানন সর্বাগ্রে পেয়ে থাকেন পুজো—এটাই তো চোখ-ভোলামন দুর্বল ললিত-কলার বিরুদ্ধে স্থুলতম প্রোটেস্‌ট। বর্তমান যুগে ঐ গণেশের শুড়ই তো চিম্নি মূর্ত্তি ধ’রে পাশ্চাত্য পণ্য যজ্ঞশালায় বৃংহিতধ্বনি করছে। গণনায়কের এই কুৎসিত বেসুরের জোরেই কি ওরা সিদ্ধিলাভ করছে না। চিন্তা ক’রে দেখো।

 দেখব।

 যখন করবে তখন এ কথাটাও ভেবে দেখো, বেসুরের তাজেয় মাহাত্ম্য কঠিন ডাঙাতেই। সিংহ বলো ব্যাঘ্র বলো বলদ বলো যাদের সঙ্গে সগর্ব্বে বীরপুরুষদের তুলনা করা হয় তারা কোনো কালে ওস্তাদজির কাছে গলা সাধে নি। এ কথায় তোমার সন্দেহ আছে কি।

 তিলমাত্র না।

 এমন কি ডাঙার অধম পশু যে গর্দ্দভ, যত দুর্ব্বল সে হোক না, বীণাপাণির আসরে সে সাক্রেদি করতে যায় নি একথা তার শত্রু মিত্র একবাক্যে স্বীকার করবে।

 তা করবে।

 ঘোড়া তো পোষমানা জীব,—লাথি মারবার যোগ্য খুর থাকা সত্ত্বেও নির্বিবাদে চাবুক খেয়ে মরে—তার উচিত ছিল আস্তাবলে খাড়া দাঁড়িয়ে ঝিঁঝিঁটখাম্বাজ আলাপ করা। তার চিঁহিঁ হিঁ হিঁ শব্দে সে রাশি রাশি সফেন

১১৮