পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

ছাড়তে পারেনি—শুচিবায়ুগ্রস্ত,—নাড়ী দুর্ব্বল। আমরা বেছন্দ চাই বেপরোয়া। কবির মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া গেল। বললুম, আরো একবার কোমর বেঁধে লাগো, বাঙালি ছেলেদের কানে জোরের কথা হাতুড়ি পিটিয়ে চালিয়ে দাও, মনে রেখে পিটুনির চোটে ঠেলা মেরে জোর চালানো আজ পৃথিবীর সর্ব্বত্রই প্রচলিত।—বাঙালি শুধু কি ঘুমায়ে রয়। দেখলুম লোকটার অন্তঃকরণ পাক খেয়ে উঠেছে। ব’লে উঠল, নয় নয় কখনোই নয়। কলমটাকে কামড়ে ধ’রে ছুটে গিয়ে বসল টেবিলে। করজোড়ে গণেশকে বললে, তোমার কলাবধূকে পাঠিয়ে দাও অন্তঃপুরে, সিদ্ধিদাতা। লাগাও তোমার শুঁড়ের আছাড় আমার মগজে, ভূমিকম্প লাগুক আমার মাতৃভাষায়, জোরের তপ্ত পঙ্ক উৎসারিত হোক্ কলমের মুখে, দুঃস্রাব্যের চোটে বাঙালির ছেলেকে দিক্‌ জাগিয়ে। কবি মিনিট পনেরো পরে বেরিয়ে চীৎকার সুরে আবৃত্তি সুরু করলে। মুখ চোখ লাল, চুলগুলো উস্কোখুস্কো, দশা পাবার দশা।


মার্ মার্ মার্ রবে মার্ গাঁট্টা।
মারহাট্টা, ওরে মারহাট্টা।
ছুটে আয় দুদ্দাড়,
ভাঙ্ মাথা, ভাঙ্ হাড়,
কোথা তাের বাসা আছে হাড়কাট্টা।
আন্ ঘুষাে, আন্ কিল,
আন্ ঢেলা, আন্ ঢিল,
নাক মুখ থেঁতাে ক’রে দিক্‌ ঠাট্টা।
আগডুম বাগডুম
দুমদাম ধুমাধুম,
ভেঙে চুরে চুরমার হােক্ খাট্‌টা,
ঘুম যাক্, আরাে কষে মালসাট্টা।

১২১

১৬