পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 না, বোঝবার দরকার নেই। তুমি তাঁর কথা বলে যাও, মজা লাগে শুনতে।

 আমারো লাগে, কেননা লোকটাকে বুঝতে লাগে দেরি। একদিন চীন দার্শনিকের দোহাই দিয়ে মাষ্টার আমাকে বললে, যে-রাজ্যে রাজত্বটা নেই সেই রাজ্যই সকল রাজ্যের সেরা।

 পুপে সগর্ব্বে বললে, আমাদের ক্লাস সেরা ক্লাস ছিল সন্দেহ নেই।

 আমি বললুম, তার কারণ, প্রমাণ সত্ত্বেও তোমার কমবুদ্ধির লক্ষণ মাষ্টার লক্ষ্য করতেন না।

 পুপে মাথা ঝাঁকিয়ে বললে, এটাকে কি গাল বলব, না ঠাট্টা।

 আমি বললুম, পাশ দিয়ে যেতে যেতে তোমার চুলটা টেনে দিই, এ ঠাট্টা সেই স্নিগ্ধ জাতের। এতে ক্যাসাস্ ব্যালাই, অর্থাৎ অদ্য যুদ্ধ ত্বয়া ময়ার ঘোষণা নেই।

 পুপে বললে, মাষ্টার মশায়ের ব্যবস্থা ছিল মজার রকমের। তিনি বলতেন, তোমাদের নিজের খবর নিজেই রাখবে; তোমাদের খবরদারি করবার কাজ আমার নয়। প্রতিদিনের পড়ার ফল নিজেরাই রাখতুম—মার্কা দেবার নিয়ম জানা ছিল।

 তার ফল কী হোলো।

 মার্কা বরঞ্চ কম করেই দিতুম।

 কখনো কি ঠকাতে না।

 বাইরের কেউ মার্কা দেবার থাকলে তাকে ঠকাবার লোভ হোতে পারত। নিজেকে ঠকানো বোকামি। বিশেষত তিনি তো দেখতেন না।

 তারপরে।

 তারপরে প্রত্যেক তিনমাস অন্তর নিজেরাই হিসেব ক'রে জানতুম উঠছি কি নাবছি।

১২৮