১৪
পরদিন সকালবেলায় প্রাতরাশে আমার নির্দ্দেশ মতো পুপেদিদি নিয়ে এল পাথরের পাত্রে ছোলাভিজে এবং গুড়। বর্ত্তমান যুগে পুরাকালীন গৌড়ীয় খাদ্যবিধির রেনেসাস্ প্রবর্ত্তনে লেগেছি। দিদিমণি জিগেস করলে, চা হবে কি। আমি বললুম, না, খেজুর রস।
দিদি বললে, আজ তোমার মুখখানা মন দেখছি কেন। কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখেছ না কি।
আমি বললুম, স্বপ্নের ছায়া তো মনের উপর দিয়ে যাওয়া-আসা করছেই, স্বপ্নও মিলিয়ে যায় ছায়ারও চিহ্ন থাকে না। আজ তোমার ছেলেমানুষির একটা কথা বারবার মনে পড়ছে—ইচ্ছে করছে বলি।
বলো না।
সেদিন লেখা বন্ধ ক’রে বারান্দায় বসে ছিলুম। তুমি ছিলে, সুকুমারও ছিল। সন্ধে হয়ে এল, রাস্তার বাতি জ্বালিয়ে গেল, আমি বসে বসে সত্যযুগের কথা বানিয়ে বানিয়ে বলছিলুম।
বানিয়ে বলছিলে। তার মানে ওটাকে সত্যযুগ ক’রে তুলছিলে।
ওকে অসত্য বলে না। যে রশ্মি বেগনির সীমা পেরিয়ে গেছে তাকে দেখা যায় না ব’লেই সে মিথ্যে নয়, সেও আলো। ইতিহাসের সেই বেগ্নিপেরোনো আলোতেই মানুষের সত্যযুগের সৃষ্টি। তাকে প্রাগ্-ঐতিহাসিক বলব না, সে আলট্রা-ঐতিহাসিক।