পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 শোনাচ্চে ভালো। অনেকদিন বেকবি আছি দাদা, পাকযন্ত্রটা হন্যে হয়ে উঠেছে—তোমাদের ঐ নস্যটার দালালি করতে পারি যদি নিয়ুমার্কেটে, তাহোলে—

 অল্প একটু বাধা পড়েছে সে কথা পবে বলব। তাঁদেব আব একটা মত আছে। তাঁরা বলেন, মানুষ দু পায়ে খাড়া হয়ে চলে ব’লে তাদের হৃদযন্ত্র পাকযন্ত্র ঝুলে ঝুলে মরছে, অস্বাভাবিক অত্যাচার ঘটেছে লাখো লাখে বৎসর ধ’রে। তার জবিমানা দিতে হচ্চে আয়ুক্ষয় করে। দোলায়মান হৃদয়টা নিয়ে মরছে নরনারী। চতুষ্পদের কোনো বালাই নেই।

 বুঝলুম, কিন্তু উপায়?

 ওঁরা বলছেন, প্রকৃতিব মূল মৎলবটা শিশুদের কাছ থেকে শিখে নিতে হবে। সেই দ্বীপেব সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ে শিলালিপিতে অধ্যাপক খুদে রেখেছেন—সবাই মিলে হামাগুড়ি দাও, ফিরে এসে চতুষ্পদী চালে, যদি দীর্ঘকাল ধরণীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাও।

 সাবাস। আরো কিছু বাকি আছে বোধ হয়।

 আছে। ওঁরা বলেন, কথা কওয়াটা মানুষের বানানো। ওটা প্রকৃতিদত্ত নয়। ওতে প্রতিদিন শ্বাসেব ক্ষয় হোতে থাকে, সেই শ্বাসক্ষয়েই আয়ুক্ষয়। স্বাভাবিক প্রতিভায় এ কথাটা গোড়াতেই আবিষ্কার কবেছে বানর। ত্রেতাযুগেব হনুমান আজো আছে বেঁচে। আজ ওরা নিরালায় বসে সেই বিশুদ্ধ আদিম বুদ্ধির অনুসরণ করছেন। মাটির দিকে মুখ ক’বে সবাই একেবারে চুপ। সমস্ত দ্বীপটাতে কেবল নাকের থেকে হাঁচির শব্দ বেবয়, মুখের থেকে কোনো শব্দই নেই।

 পরস্পর বোঝাপড় চলে কী ক’রে?

 অত্যাশ্চর্য্য ইসারার ভাষা উদ্ভাবিত।—কখনো ঢেঁকি-কোটার ভঙ্গীতে, কখনো হাতপাখা-চালানোর চালে, কখনো ঝোড়ো সুপুরি গাছের নকলে

১১