সমস্ত শেয়াল সমাজ স্তম্ভিত।
তারপর ছ মাস গেল।
শেষ খবর পাওয়া গেছে। শিবুরাম সারারাত হেঁকে হেঁকে বেড়াচ্চে, আমার ল্যাজ কই আমার ল্যাজ কই।
গোঁসাইয়ের শোবার ঘরের সামনের রোয়াকে ব’সে উর্দ্ধদিকে মুখ তুলে প্রহরে প্রহরে কোকিয়ে উঠে’ বলে, আমার ল্যাজ ফিরে দাও।
গোঁসাই দরজা খুলতে সাহস করে না—ভয় পায় পাছে তাকে ক্ষ্যাপা শেয়ালে কামড়ায়।
শেয়াঁঁলকাঁটার বনে যেখানে শিবুরামের বাড়ি সেখানে ওর যাওয়া বন্ধ। জ্ঞাতিরা ওকে দূর থেকে দেখলে, হয় পালায়, নয় খোঁকিয়ে কামড়াতে আসে। ভাঙা চণ্ডীমণ্ডপেই থাকে, সেখানে একজোড়া প্যাঁচা ছাড়া আর অন্য প্রাণী নেই। খাঁদু, গোবর, বেঁচি, ঢেঁড়ি প্রভৃতি বড়ো বড়ো ডানপিটে ছেলেরাও ভূতের ভয়ে সেখানকার জঙ্গল থেকে করমচা পাড়তে যায় না।
শেয়ালি ভাষায় শেয়াল একটা ছড়া লিখেছে, তার আরম্ভটা এই রকম:—
ওরে ল্যাজ, হারা ল্যাজ, চক্ষে দেখি ধুঁয়া।
বক্ষ মোর গেল ফেটে হুক্কা হুযা হুয়া ৷
পুপে ব’লে উঠল, কী অন্যায়, ভারি অন্যায়। আচ্ছা দাদামশায়, ওর মাসিও ওকে নেবে না ঘরে?
আমি বললুম, তুমি ভেবো না; ওর গায়ের রোঁয়াগুলো আবার উঠুক, তখন ওকে চিন্তে পার্বে।
কিন্তু ওর ল্যাজ?
হয়তো লাঙ্গুলাদ্য ঘৃত পাওয়া যেতে পারে কবিরাজ মশায়ের ঘরে। আমি খোঁজ নেব।
২১