গেছো বাবা
উধো। কী রে সন্ধান পেলি?
গোবরা। আরে ভাই, তোমার কথা শুনে আজ মাসখানেক ধ’রে বনেবাদাড়ে ঘুরে ঘুরে, হাড় মাটি হোলো, টিকিও দেখতে পেলুম না।
পঞ্চু। কার সন্ধান করছিস্ রে?
গোবরা। গেছো বাবার।
পঞ্চু। গেছো বাবা? সে আবার কে রে?
উধো। জানিস্ নে? বিশ্বযুদ্ধ লোক তাকে জানে।
পঞ্চু। তা গেছো বাবার ব্যাপারটা কী শুনি?
উধো। বাবা যে-গাছে চ’ড়ে বসবে সেই গাছই হবে কল্পতরু। তলায় দাঁড়িয়ে হাত পাতলেই যা চাইবি তাই পাবি রে।
পঞ্চু। খবর পেলি কার কাছ থেকে?
উধো। ধোকড় গাঁয়ের ভেকু সর্দ্দারের কাছ থেকে। বাবা সেদিন ডুমুর গাছে চ’ড়ে ব’সে পা দোলাচ্ছিল, ভেকু জানে না, তলা দিয়ে যাচ্চে, মাথায় ছিল এক হাঁড়ি চিটেগুড়, তামাক তৈরি করবে। বাবার পায়ে ঠেকে তার হাঁড়ি গেল ট’লে,—চিটেগুড়ে তার মুখ চোখ গেল বুজে। বাবার দয়ার শরীর, বললে ভেকু, তোর মনের কামনা কী, খুলে বল্। ভেকুটা বোকা, বললে—বাবা, একখানা ট্যানা দাও মুখটা মুছে ফেলি। যেমনি বলা অমনি গাছ থেকে খসে পড়ল একখানা গামছা। মুখ চোখ মুছে উপরে যখন তাকালো তখন আর কারো দেখা নেই। যা চাইবে কেবল একবার। বাস্, তারপরে কেঁদে আকাশ ফাটালেও সাড়া মিলবে না।
পঞ্চু। হায়রে হায়, শাল নয় দোশালা নয় শুধু একখানা গামছা! ভেকুর আর বুদ্ধি কত হবে।
২৩