ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বললুম, পুত্তুলাল, তোর পিঠে বাত আছে, ব্যাঙটাকে খুব কষে লাফাতে দে, বিনিপয়সায় অমন ভালো মালিষ আর পাবিনে। গাড়ির ছাদের উপর দাঁড়িয়ে ডাক দিতে লাগলুম, বনমালী, বনমালী। ইষ্টুপিডের কোনো সাড়াশব্দ নেই। স্পষ্টই বোঝা গেল সে তখন বোলপুর ষ্টেশনের প্ল্যাটফরমে চাদরমুড়ি দিয়ে নাক ডাকিয়ে ঘুমচ্চে। ভারি রাগ হোলো। ইচ্ছে করল তার নাকের মধ্যে ফাউণ্টেন পেনের সুড়সুড়ি দিয়ে তাকে হাঁচিয়ে দিয়ে আসিগে। এদিকে পাঁকের জলে আমার চুলগুলো গেছে ভিজে। না আঁচড়ে নিয়ে ওর বৌদিদির ওখানে যাই কী ক’রে। গোলমাল শুনে পুকুরপাড়ে হাঁসগুলো প্যাঁক প্যাঁক করে ডেকে উঠেছে। একলাফ দিয়ে পড়লুম তাদের মধ্যে; একটাকে চেপে ধরে তার ডানা দিয়ে ঘষে ঘষে চুলটা একরকম ঠিক ক’রে নিলুম। পুত্তুলাল বললে, ঠিক বলেছ দাদাবাবু। ব্যাঙের লাফে বড়ো আরাম বোধ হচ্চে। ঘুম আসছে।
যাওয়া গেল ওর বৌদিদির বাড়িতে। ক্ষিদের চোটে একেবারে ভুলে গেছি কনে দেখার কথা। বৌদিদিকে জিগেস করলেন, আমার সঙ্গে ছিল সে, তাকে দেখছিনে কেন?
তিন হাত দোপাট্টা কাপড়ের ঘোমটার ভিতর থেকে মিহিসুরে বৌদিদি বললে, সে কনে খুঁজতে গেছে।
কোন্ চুলোয়?
মজা দিঘির ধারে বাঁশতলায়।
কত দূর হবে?
তিন পহরের পথ।
দূর বেশি নয় বটে। কিন্তু ক্ষিধে পেয়েছে। তোমার সেই চাটনি বের করো দিকি।
বৌদিদি নাকিসুরে বল্লে, হায়রে, আমার পোড়াকপাল, এই গেল
৩৬