পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 স্মৃতিরত্নমশায় মোহনবাগানের গোল-কীপারি ক’রে ক্যালকাটার কাছ থেকে একে একে পাঁচ গোল খেলেন। খেয়ে ক্ষিদে গেল না,উল্টো হোলো, পেট চোঁ চোঁ করতে লাগল। সামনে পেলেন অক্‌টর্লনি মন্যুমেণ্ট। নিচে থেকে চাটতে চাটতে চূড়া পর্য্যন্ত দিলেন চেটে।

 বদরুদ্দিন মিঞা সেনেটহলে বসে জুতো সেলাই করছিল, সে হাঁ হাঁ ক’রে ছুটে এল। বললে- আপনি শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত হয়ে এত বড় জিনিষটাকে এঁটো করে দিলেন।” ‘তোবা তোবা’ বলে তিনবার মন্যুমেণ্টের গায়ে থুথু ফেলে মি সাহেব দৌড়ে গেল ষ্টে্‌টম্যান্ আপিসে খবর দিতে।

 স্মৃতিরত্নমশায়ের হঠাৎ চৈতন্য হোলো মুখটা তাঁর অশুদ্ধ হয়েছে। গেলেন ম্যুজিয়মের দরোয়ানের কাছে। বললেন, পাঁড়েজি, তুমিও ব্রাহ্মণ আমিও ব্রাহ্মণ, একটা অনুরোধ রাখতে হবে।

 পাঁড়েজি দাড়ি চুমরিয়ে নিয়ে সেলাম ক’বে বললে, কোমা ভূ পোর্ত্তে ভূ সি ভূ প্লে।

 পণ্ডিতমশায় একটু চিন্তা ক’বে বললেন, বড়ো শক্ত প্রশ্ন, সাংখ্যকারিকা মিলিয়ে দেখে কাল জবাব দিয়ে যাব। বিশেষ অজি আমার মুখ অশুদ্ধ, আমি মন্যুমেণ্ট চেটেছি।

 পাঁড়েজি দেশালাই দিয়ে বর্ম্মা চুরুট ধরাল। দুটান টেনে বললে, তাহেলে এক্ষুনি খুলুন ওয়েবষ্টার ডিক্‌সনারী, দেখুন বিধান কী।

 স্মৃতিরত্ন বললেন, তাহোলে তো ভাটপাড়ায় যেতে হয়। সে পবে হবে, আপাতত তোমার ঐ পিতলে বাঁধানো ডাণ্ডাখানা চাই।

 পাঁড়ে বললে, কেন কী করবেন, চোখে কয়লার গুঁড়ো পড়েছে বুঝি?

 স্মৃতিরত্ন বললেন, তুমি খবর পেলে কেমন ক’রে? সে তো পড়েছিল পশু দিন। ছুটতে হোলো উল্টোডিঙিতে যকৃত-বিকৃতির বড়ো ডাক্তার ম্যাকার্টনি

৪৪