পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 বললুম, পাতুর স্ত্রী স্বামীর স্বত্ব পাবার জন্যে তোমার নামে আদালতে নালিশ করেছে।

 এইটুকু শুনেই সে বলে উঠল, এ চলবে না দাদা। পাতুর স্ত্রীকে তুমি চক্ষে দেখোনি তো। মকদ্দমায় ঐ মহিলাটি যদি জেতে তাহোলে যে আসামী পক্ষ আফিম খেয়ে মরবে।

 ভয় কী, কথা দিচ্চি, হার হোক, জিত হোক, টিঁকিয়ে রাখব তোমাকে।

 আচ্ছা ব’লে যাও।

 হাত জোড় ক’রে তুমি হাকিমকে বললে, হজুর ধর্ম্মাবতার সাতপুরুষে আমি ওর স্বামী নই।

 উকিল চোখ রাঙিয়ে বললে, স্বামী নও তার মানে কী।

 তুমি বললে, তার মানে, এ পর্য্যন্ত আমি ওকে বিয়ে করিনি, দ্বিতীয় আর কোনো মানে আপাতত কিছুতেই ভেবে পাচ্চিনে।

 রামসদয় মোক্তার খুব একটা ধমক দিয়ে বললে, আলবৎ তুমি ওর স্বামী, মিথ্যে কথা বোলো না।

 তুমি জজ সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললে, জীবনে বিস্তর মিথ্যে বলেছি, কিন্তু ঐ বুড়িকে সজ্ঞানে স্বইচ্ছায় বিয়ে করেছি, এত বড়ো দিগ্‌গজ মিথ্যে বানিয়ে বলবার তাকৎ আমার নেই। মনে করতে বুক কেঁপে ওঠে।

 তখন ওরা সাক্ষী তলব করলে পঁয়ত্রিশজন গঁজাখোরকে। একে একে তারা গাঁজাটেপা আঙুল তোমার মুখে বুলিয়ে বলে গেল, চেহারাটা একেবারে হুবহু পাতুর; এমন কি, বা কপালের অবিটা পর্য্যন্ত। তবে কি না—

 মোক্তার তেরিয়া হয়ে উঠে বললে,—তবে কিনা আবার কিসের।

 ওরা বললে,—সেই রকমের পাতুই বটে কিন্তু সেই পাতুই, হলপ ক’রে

৭৭