পাতা:সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৬
সােনার তরী।

শীর্ণ গালে হাত দিয়ে নত করি’ শিল্প
রাজ্যসুদ্ধ বালবৃদ্ধ ভেবেই অস্থির।
ছেলেরা ভুলেছে খেলা, পণ্ডিতেরা পাঠ,
মেয়েরা করেছে চুপ—এতই বিভ্রাট।
সারি সারি বসে’ গেছে কথা নাই মুখে,
চিন্তা যত ভারি হয় মাথা পড়ে ঝুঁকে।
ভুঁই ফোঁড়া তত্ত্ব যেন ভূমিতলে খোঁজে,
সবে যেন বসে’ গেছে নিরাকাব ভোজে।
মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া উৎকট
হঠাৎ ফুকারি উঠে—“হিং টিং ছট্‌।”
স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃত সমান,
গৌড়ানন্দ কবি ভণে, শুনে পুণ্যবান্।

চারিদিক হতে এল পণ্ডিতের দল,
অযোধ্যা কানোজ কাঞ্চী মগধ কোশল,
উজ্জয়িনী হতে এল বুধ-অবতংস—
কালিদাস কবীরে ভাগিনেয়বংশ।
মোটা মোটা পুঁথি লয়ে উলটায় পাতা,
ঘন ঘন নাড়ে বসি’ টিকিসুদ্ধ মাথা!
বড় বড় মস্তকের পাকা শস্যক্ষেত
বাতাসে দুলিছে যেন শীর্ষ-সমেত!
কেহ শ্রুতি, কেহ স্মৃতি, কেহ বা পুরাণ,
কেহ ব্যাকরণ দেখে, কেহ অভিধান;